হার দিয়ে বিপিএলের নিজেদের মাঠের পর্ব শেষ করল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। নিজেদের ভেন্যুতে চার ম্যাচের চারটিতেই জেতার প্রত্যাশা করলেও শেষ পর্যন্ত একটি জয় নিয়ে ঢাকা ফিরতে হচ্ছে চট্টগ্রাম দলকে। টানা তিন পরাজয়ে আসর শুরু করা খুলনা জিতল পরপর দুই ম্যাচ। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চারে উঠে এসেছে তারা। ৬ ম্যাচে চট্টগ্রামের চতুর্থ হার এটি।
যে খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে এবারের বিপিএলে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স গতকাল নিজেদের ভেন্যুতে শেষ ম্যাচে সেই খুলনার মুখোমুখি হয়েছিল তারা। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে খুলনা টাইাগার্স ৭ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে।
এটি এবারের বিপিএলে খুলনার দ্বিতীয় জয়। টানা তিন ম্যাচে হারের পর টানা দুই ম্যাচে জিতল খুলনা। আর চট্টগ্রাম ৬ ম্যাচের দুটিতে জিতেছে। গতকাল ভাল ব্যাটিংয়ের আশা জাগিয়েও ব্যাটিংটা ভাল হয়নি চট্টগ্রামের। পরে বোলাররাও পারেনি ব্যাটারদের দেওয়া ১৫৭ রানকে নির্ভরতা বানাতে। তামিম–জয়ের ১০৯ রানের জুটির পর রাব্বি–আজম খানের অবিচ্ছিন্ন ৫০ রানের জুটি দারুণ এক জয় তুলে নেয় খুলনা টাইগার্স।
এদিকে এই হারের ফলে নক আউট পর্ব কঠিন হয়ে গেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের জন্য। যদিও খুলনা টাইগার্সও খুব ভাল অবস্থায় নেই। কারণ দুই দলেরই জয় দুটি করে। তবে তারা যেহেতু একটি ম্যাচ কম খেলেছে চট্টগ্রামের চাইতে তাই সেটাই তাদের শক্তির জায়গা।
গতকালের ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স শুরুটা ভাল করতে পারেনি। দলের খাতায় ৮ রান যোগ হতেই ফিরেন ম্যাক্স ও ডাউড। দ্বিতীয় উইকেটে ওসমান খান এবং আফিফ হোসেন মিলে দারুণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দলকে। কিন্তু ৭০ রান যোগ করার পর বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ৩১ বলে ৪৫ রান করা ওসমান খান ফিরেন আমাদ ভাটের শিকার হয়ে।
এ দুজন যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ মনে হচ্ছিল বড় স্কোর গড়বে চট্টগ্রাম। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই রানের গতি ধীর হয়ে আসে। তৃতীয় উইকেটে আফিফ এবং ডরউইস রাসুলি মিলে যোগ করেন ৩৩ রান। এরপর থেকে কেবলই আসা যাওয়া করেছে চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। দলকে ১১১ রানে পৌঁছে দিয়ে আফিফ ফিরেছেন ৩১ বলে ৩৫ রান করে। এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মত খেলতে নামা খাজা নাফে পারেননি নিজের অভিষেকটাকে স্মরনীয় করে রাখতে। ফিরেছেন ৫ রান করে।
পরের ওভারে রান আউট হয়ে ফিরেছেন রাসুলি। এই আফগান করেন ২৬ বলে ২৫ রান। এক সময় মনে হচ্ছিল দুইশর কাছাকাছি যাবে চট্টগ্রামের স্কোর। কিন্তু সেটা পরবর্তীতে দেড়শ পার হয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত ১৫৭ করেছে চট্টগ্রাম। আর সেটা সম্ভব হয়েছে শেষদিকে ফরহাদ রেজার ৯ বলে ২১ রানের কল্যাণে। খুলনার পক্ষে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। এই ম্যাচে তিনি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটের মাইল ফলক অতিক্রম করেন। ২টি উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন।
১৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা খুলনা টাইগার্স দ্বিতীয় বলেই হারায় মুনিম শাহরিয়ারকে। এরপর জুটি গড়ে তোলেন তামিম এবং মাহমুদুল হাসান জয়। তামিমের তুলনায় বেশি আগ্রাসী ছিলেন জয়। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ দুজন যোগ করেন ১০৪ রান। ৪টি চারের পাশাপাশি একটি ছক্কা মেরেছেন তামিম। নিজের পরের ওভারে আবার নিহাদুজ্জামানের আঘাত।
এবার তার শিকার মাহমুদুল হাসান জয়। তাকে বোল্ড করেন নিহাদ। ৪৪ বলে ৫৯ রান করে ফিরেন জয়। মেরেছেন ৫টি চার এবং একটি ছক্কা। এরপর জুটি বাঁধেন অধিনায়ক রাব্বি এবং পাকিস্তানী আজম খান।
দুজন খানিকটা ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয় উপহার দিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন দুজন। আজম খান ১৬ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর ইয়াসির আলি রাব্বি ১৭ বলে ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২টি চার এবং ৪টি মেরেছেন রাব্বি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পক্ষে ২টি উইকেট নিয়েছেন নিহাদুজ্জামান। ম্যাচ সেরা হয়েছেন খুলনা টাইগার্সের মাহমুদুল হাসান জয়।












