টানা পঞ্চম জয় মাশরাফির সিলেটের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কোনমতেই যেন থামানো যাচ্ছে না সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। ঢাকার মাঠে সর্বোচ্চ চার ম্যাচ খেলে চারটিতেই জয় নিয়ে চট্টগ্রামে আসে মাশরাফির দল। চট্টগ্রামে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন মাশরাফিমুশফিকরা। অনুশীলনের পাশাপাশি হাসিআনন্দে সময় কাটিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে মাঠের লড়াইয়ে এতটুকু ছেদ পড়তে দেয়নি। ঢাকার টানা চার জয়কে চট্টগ্রামে এসেও অব্যাহত রাখল দলটি। বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের তৃতীয় দিনে মাঠে নেমে ঠিকই জয় তুলে নিলেন। টানা পাঁচ ম্যাচে জিতে এখনো অপরাজিত মাশরাফির দল। সে সাথে নক আউটের পথেও যেন এগিয়ে গেল অনেক দুর। গতকাল জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স।

আগের ম্যাচে চট্টগ্রামের কাছে হার মানা ঢাকা চার ম্যাচের তিনটিতেই হারল। ফলে একদিকে সিলেটের নক আউটে যাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে গেলেও ঢাকার জন্য কঠিন হয়ে গেল। যদিও ঢাকার চাইতে কঠিন অবস্থায় রয়েছে খুলনা এবং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা। তবে তারুন্য আর অভিজ্ঞতা মিলিয়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠা সিলেট যেন কাউকে পাত্তাই দিতে চাইছে না। সিলেট স্ট্রাইকার্সের সবচাইতে বড় তারকা হয়ে উঠা তৌহিদ হৃদয় ইনজুরির কারনে ছিলেন না এই ম্যাচে। এবারের বিপিএলের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্কোরারের অনুপস্থিতি মোটের টের পেতে দেননি অন্যরা। ব্যাটিং, বোলিং আর ফিল্ডিং মিলিয়ে আরো একটি দারুন জয় তুলে নিল মাশরাফির দল। যে জয় তাদের কেবলই পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে রাখেনি একেবারে অজেয় রাখল।

টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ঢাকা ডমিনেটর্স প্রথম ওভারেই হারায় সৌম্য সরকারকে। রুবেল হোসেনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন সৌম্য সরকার রানের খাতা খোলার আগেই। দ্বিতীয় উইকেটে দিলশান মুনাবিরা এবং ওসমান গনি চেষ্টা করেছেন রানের চাকা সচল করতে। তবে সেটা ছিল একেবারে কচ্ছপ গতির। ৩১ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। ১৭ বলে ১৭ রান করে ফিরেন দিলশান মুনাবিরা। এরপর বল খেলেই ফিরেন রবিন দাশ। পরপর দুই বলে দিলশান মুনাবিরা এবং রবিন দাশকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন পাকিস্তানি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম। কিন্তু সেটা আর হয়নি। ৯.৫ ওভারে দলকে ৫১ রানে পৌঁছে দিয়ে ফিরেন ওসমান গনি। করেন ২৮ বলে ২৭ রান। মোহাম্মদ মিথুন ব্যাটিং করেছেন টিটোয়েন্টির বিপরীতে। ২৩ বলে ১৫ রান করেন ঢাকার উইকেট রক্ষক।

এক পর্যায়ে শতরান পার হবে কিনা ঢাকার ইনিংস সে শংকা যখন উঁকি দিচ্ছিল তখন অধিনায়ক নাসির হোসেন এবং আরিফুল হক মিলে দলকে লজ্জার হাত থেকে রক্ষা করেন। মুলত এ দুজনের ৫০ রানের জুটি দলকে ১২৮ রানে নিয়ে যেতে ভুমিকা রাখে। পরপর দুই ওভারে ফিরেন এদুজন। আরিফুল ফিরেন ১৬ বলে ২০ রান করে আর নাসির ফিরেন ৩১ বলে ৩৯ রান করে। সিলেটের পক্ষে সফল বোলার পাকিস্তানি ইমাদ ওয়াসিম। তিনি নিয়েছেন ২০ রানে ৩ উইকেট।

১২৯ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মোহাম্মদ হারিস। ৫২ রান যোগ করেন দুজন উদ্বোধনী জুটিতে। ২ রান করা শান্ত ফিরলে ভাঙে এজুটি। ৯ রান পর ফিরেন আরেক ওপেনার হারিস। তবে ফেরার আগে করেন ৩২ বলে ৪৪ রান। মেরেছেন ৫টি চার এবং ২টি ছক্কা। পরের ওভারে ১ রান করে ফিরেন জাকির হাসান। ৬১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর হাল ধরেন মুশফিক এবং ইমাদ ওয়াসিম। আরিফুলের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ইমাদ ওয়াসিম ফিরলে ভাঙ্গে ৩২ রানের জুটি। ২০ বলে ১১ রান করেন ওয়াসিম। চাপের মুখে ভেঙ্গে পড়ে ফিরেন মুশফিকও।

তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে করেন ২৫ বলে ২৭ রান। তবে লংকান থিসারা পেরেরা এবং আকবর আলি মিলে কোন বিপদ হতে দেননি। দুজন মিলে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ৪ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেন থিসারা পেরেরা এবং আকবর আলি। ১১ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন থিসারা পেরেরা আর ৫ বলে ১০ রান করে অপরাজিত থাকেন আকবর আলি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের ইমাদ ওয়াসিম। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিসিবি পরিচালক মনজুর আলম মনজু।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচসিক একাদশ ও গ্রীণের ক্রিকেট অনুশীলন উদ্বোধন
পরবর্তী নিবন্ধহ্যান্ডবলে চট্টগ্রাম জেলা দল চ্যাম্পিয়ন