একাদশে ভর্তিতে প্রথম পর্যায়ের ফলাফলে মনোনীত হয়েও ভর্তি নিশ্চায়ন করেনি চট্টগ্রামের ২১ হাজার ৪৭৩ জন শিক্ষার্থী। মনোনীত হয়েও ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন না করা এসব শিক্ষার্থীর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় আজ (১০ জানুয়ারি) রাত ৮টার মধ্যে তাদের পুনরায় আবেদন করতে হবে। গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে প্রথম পর্যায়ের ফলাফল (ভর্তিতে মনোনীতদের তালিকা) প্রকাশিত হয়। ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৫ জন আবেদনকারীদের মধ্যে প্রথম তালিকায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৮ জন শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়। তবে আবেদন করেও ১৩ হাজার ৮৩৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য প্রথম তালিকায় কোনো কলেজ পায়নি। প্রথম তালিকায় কলেজ না পাওয়া এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ জিপিএ–৫ ধারী ১৬৬৭ জন শিক্ষার্থীও রয়েছে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেয়েও প্রথম তালিকায় তারা ভর্তির জন্য কোনো কলেজ পায়নি।
এদিকে, প্রথম পর্যায়ের ফল প্রকাশের পর গত ১ জানুয়ারি থেকে টেলিটক ও মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, নগদ, রকেট, সোনালী ব্যাংক ও শিওর ক্যাশে নির্ধারিত ফি পরিশোধের মাধ্যমে মনোনীতদের ভর্তি নিশ্চায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৮ জানুয়ারি রাতে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়নের এ সুযোগ শেষ হয়।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব–কমিটি সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, প্রথম পর্যায়ের ফলাফলে মনোনীত চট্টগ্রামের ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৮ জনের মধ্যে নির্ধারিত সময় (৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৯৬ হাজার ৮৮৫ জন শিক্ষার্থী তাদের ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন করেছে। নিশ্চায়ন না করা ২১ হাজার ৪৭৩ শিক্ষার্থীকে পুনরায় আবেদন করতে হবে জানিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক বলেন, মনোনীত হয়েও প্রাথমিক নিশ্চায়ন না করা ওইসব শিক্ষার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে। একই সাথে তাদের আবেদনও বাতিল হয়ে গেছে। তাই তাদের নতুন করে আবার আবেদন করতে হবে। পুনরায় আবেদিন ফিও দিতে হবে তাদের।
এছাড়া প্রথম তালিকায় ঠাঁই না পাওয়া শিক্ষার্থীরাও আজকের মধ্যে তাদের পুরণো আবেদনটি আপডেট করতে পারবে। অর্থাৎ পুরণো আবেদনে কলেজ পরিবর্তন, নতুন কলেজ যুক্তকরণ ও পছন্দক্রম সংশোধন করা যাবে। এক্ষেত্রে তাদের কোন ফি দিতে হবে না।
নিশ্চায়ন বাতিলের সুযোগ : মনোনীত হওয়ার পর ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন করা কোন শিক্ষার্থী চাইলে তার নিশ্চায়ন বাতিল করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে অবশ্যই যৌক্তিক কারণ দেখাতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর জাহেদুল হক। যৌক্তিক কারণ থাকা সাপেক্ষে শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখায় যোগাযোগের মাধ্যমে এই নিশ্চায়ন বাতিল করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তবে নিশ্চায়ন বাতিল করা শিক্ষার্থীদের পুনরায় ফি দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন করে আবেদন করতে হবে। বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নটরডেম কলেজসহ আলাদাভাবে পরীক্ষা নেয়া কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য কেউ নির্বাচিত হলে এবং সেখানে ভর্তির জন্য সিদ্ধান্ত নিলে, সেক্ষেত্রে ওই শিক্ষার্থী যদি চট্টগ্রামের কোন কলেজে ভর্তির জন্য নিশ্চায়ন করে থাকে, তবে তাকে অবশ্যই শিক্ষাবোর্ডে এসে এই নিশ্চায়ন বাতিল করতে হবে। নয়তো পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
দ্বিতীয় দফায় আবেদনের সুযোগ শেষ হচ্ছে আজ : আন্তঃ শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব–কমিটির তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া শেষে দ্বিতীয় দফায় আবেদন শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার। আজ (১০ জানুয়ারি) রাত ৮টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় এ আবেদনের সুযোগ রয়েছে। প্রথম দফায় মনোনয়ন বঞ্চিত, মনোনীত হয়েও নিশ্চায়ন করতে না পারা এবং নিশ্চায়ন বাতিল করা শিক্ষার্থীরা এ সময়ে আবেদন করতে পারবে।
মাইগ্রেশনের জন্য আলাদা আবেদনের প্রয়োজন নেই : ২য় দফায় আবেদন গ্রহণ শেষে ১ম দফায় মাইগ্রেশনের ফল ও দ্বিতীয় দফায় মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ১২ জানুয়ারি। মাইগ্রেশন হবে স্বয়ংক্রিয়। অর্থাৎ মাইগ্রেশনের জন্য আলাদা আবেদনের সুযোগ নেই। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই শিক্ষার্থীরা আবেদনের পছন্দক্রমের উপরের দিকের কলেজে মাইগ্রেশনের সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন প্রফেসর জাহেদুল হক।
৩য় দফায় আবেদন ও ফল : আন্তঃ শিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব–কমিটির তথ্য অনুযায়ী, ১২ জানুয়ারি ফল প্রকাশের পর ২য় পর্যায়ে মনোনীতদের ১৩ থেকে ১৪ জানুয়ারি রাত ৮টার মধ্যে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। এই সময়ে ভর্তি নিশ্চায়ন না করলে মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ওই (মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হওয়া) শিক্ষার্থীকে পুনরায় ফি দিয়ে ৩য় পর্যায়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে। ১৬ জানুয়ারি একদিন ৩য় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে।
আবেদন গ্রহণ শেষে ১৮ জানুয়ারি রাত ৮টায় ২য় পর্যায়ের মাইগ্রেশনের ফল ও ৩য় পর্যায়ে মনোনীতদের ফল প্রকাশ করা হবে। ৩য় পর্যায়ে মনোনীতদের ১৯ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে। এই সময়ে ভর্তি নিশ্চায়ন না করলে মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। চূড়ান্তভাবে মনোনীত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম চলবে ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। ভর্তি কার্যক্রম শেষে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে একাদশে ক্লাস শুরু হবে।