একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনকারীদের মধ্যে চট্টগ্রামের প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর প্রথম তালিকায় ঠাঁই হয়নি।
ভর্তির আবেদন শুরু হয় ৮ ডিসেম্বর, চলে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর একাদশে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ফল প্রকাশিত হয় ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়।
এদিকে, এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও একাদশে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ফলাফলে কলেজ জোটেনি চট্টগ্রামের ১ হাজার ৬৬৭ জন শিক্ষার্থীর।
এরমধ্যে বেশিরভাগই বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী।
সর্বোচ্চ দশটি কলেজ পছন্দক্রম দিয়ে আবেদনের সুযোগ থাকলেও আবেদনে কম সংখ্যক কলেজ পছন্দ দেওয়ায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত এসব শিক্ষার্থী কলেজ পায়নি বলে মনে করেন ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা।
২০২২ সালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায় ১৮ হাজার ৬৮৮ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি।
জিপিএ-৫ পাওয়া মোট ১৮ হাজার ৬৮৮ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করে ১৮ হাজার ৪৮৬ জন। ১৬ হাজার ৮১৯ জন প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। তবে সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পেয়েও ১ হাজার ৬৬৭ শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য প্রথম পর্যায়ের তালিকায় কলেজ পায়নি।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য চট্টগ্রামের ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৫ শিক্ষার্থী অনলাইনে আবেদন করে। এর মধ্য থেকে কলেজে ভর্তির জন্য প্রথম তালিকায় নির্বাচিত হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৫৮ জন। এ হিসেবে আরো ১৩ হাজার ৮৩৭ শিক্ষার্থী আবেদন করেও প্রথম তালিকায় কলেজ পায়নি। প্রথম তালিকায় কলেজ না পাওয়ায় ভর্তির জন্য মনোনয়ন পেতে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে এসব শিক্ষার্থীকে। ওইদিন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। এর আগে ৯ থেকে ১০ জানুয়ারির মধ্যে ২য় দফায় পুনরায় আবেদন করতে হবে এসব শিক্ষার্থীকে। তবে ২য় দফায় আবেদনকালে তাদের আর আবেদন ফি দিতে হবে না।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে এবার ২৮১টি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন রয়েছে। অনুমোদিত এসব কলেজে সবমিলিয়ে আসন সংখ্যা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭১৭টি। বিপরীতে বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তির জন্য এবার আবেদন করেছে ১ লাখ ৩২ হাজার ১৯৫ জন। সে হিসেবে একাদশে ভর্তিতে আসন সংকট থাকছে না। বরঞ্চ আরও ৪০ হাজারের বেশি আসন শূন্য থাকবে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায় ১৮ হাজার ৬৬৪ জন। বিজ্ঞান বিভাগে ১৪ হাজার ৫২৫ জন, ব্যবসায় শিক্ষায় ৩ হাজার ৬৬২ জন এবং মানবিকে ৪৭৬ জন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ জিপিএ-৫ পায়। যদিও পুনঃনিরীক্ষার পর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও ২৪ জন বেড়েছে। সে হিসেবে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৮৮ জনে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক বলেন, “সর্বোচ্চ দশটি কলেজে আবেদনের সুযোগ থাকলেও জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী পছন্দের ক্ষেত্রে ৫-৬টি’র বেশি কলেজ দেয়নি। তাদের ধারণা ছিলো জিপিএ-৫ পাওয়ায় কম সংখ্যক কলেজে আবেদন করলেই হবে। কিন্তু যেসব কলেজে তারা আবেদন করেছে সেসব কলেজে তাদের তুলনায় বেশি নম্বরপ্রাপ্ত আবেদনকারীর সংখ্যা হয়তো বেশি ছিল যে কারণে আবেদন করা ওই ৫-৬টি কলেজের একটিতেও তাদের সুযোগ হয়নি। কিন্তু দশটি কলেজে আবেদন করলে এ সমস্যা হতো না। আবেদন চলাকালীন সর্বোচ্চ সংখ্যক কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রতি আমরাও বারবার অনুরোধ জানিয়েছিলাম কিন্তু অনেকেই তা করেনি।”