ঘানার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা সুলেমানা আবদুল সামেদকে তার স্থানীয় হাসপাতাল সম্প্রতি এক চেক-আপের সময় জানায়- তার উচ্চতা এখন বেড়ে হয়েছে ৯ ফুট ৬ ইঞ্চি বা ২.৮৯ মিটার। এর ফলে বর্তমান রেকর্ডের সাথে মিলিয়ে দেখলে তিনিই হচ্ছেন বিশ্বের দীর্ঘতম মানব। তবে গ্রামের ওই ক্লিনিকের নার্সরা তার উচ্চতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত নন, কারণ সামেদকে নির্ভুলভাবে মাপার উপযুক্ত যন্ত্র সেখানে নেই।
গিনেস বুক অব রেকর্ডসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা জীবিত লোক হলেন তুরস্কের ৪০ বছর বয়স্ক সুলতান কোসেন। তার উচ্চতা ৮ ফুট ২.৮ ইঞ্চি। সুলেমানা আবদুল সামেদ, ডাকনাম আউচে – জাইগ্যান্টিজম নামে একটি বিরল স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত। ২২ বছর বয়সে তার আত্মীয় স্বজনরা তাকে দেখে তার উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে মন্তব্য করতে লাগলেন। তার মেরুদণ্ড অস্বাভাবিক বাঁকা হয়ে গেল।
সামেদ বুঝতে পারলেন যে তিনি এক দানবাকৃতির মানুষে পরিণত হচ্ছেন। সামেদ যে সমস্যায় আক্রান্ত তার নাম মারফান সিনড্রোম। এটি এমন একটি জিনগত সমস্যা যাতে দেহের সংযোগকারী কোষগুলো আক্রান্ত হয় এবং তার ফলে মানুষের হাত-পা অস্বাভাবিক লম্বা হয়ে যায়। এতে হৃদপিণ্ডের ত্রুটির মত গুরুতর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ডাক্তাররা বলছেন, সামেদের এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি থামাতে হলে তার মস্তিষ্কে একটি অস্ত্রোপচার করতে হবে। তবে ঘানার সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থায় এর খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
আউচে এখন তার ভাইয়ের সাথে মিলে একটি ছোট ব্যবসা করছেন। তার সামাজিক জীবনও সংকুচিত হয়ে গেছে। তবে তার গ্রামে তিনি একজন সেলিব্রিটিতে পরিণত হয়েছেন। পথ চলতে তাকে নিয়মিত লোকের ডাকে হাসিমুখে সাড়া দিতে হয়। অনেকে তার সাথে সেলফি তোলেন। তবে এ সমস্যার জন্য সুলেমানা আবদুল সামেদ ভেঙে পড়েননি। আল্লাহ আমার ভাগ্যে এটাই ঘটবে বলে ঠিক করেছেন, বলেন তিনি। ‘আমি ঠিক আছি, সৃষ্টিকর্তা আমাকে যেভাবে তৈরি করেছেন তা নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই।