কক্সবাজারের চকরিয়ায় হঠাৎ বেড়ে গেছে সংঘবদ্ধ মোটর সাইকেল চোর–ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা। প্রতিদিনই রাত বাড়ার সাথে সাথে সংঘবদ্ধ এই চোর–ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে উপজেলার বিভিন্নস্থানে এই অপকর্ম করে যাচ্ছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝটিকা অভিযানে তিনটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন– চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ার জামাল উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ হোছাইন, ইউনিয়নের আলীপুরের ফরিদুল আলমের ছেলে মোহাম্মদ কাইছার ও বান্দরবানের লামা উপজেলার সুতাবাদী পাড়ার হাসেম মোল্লার ছেলে জোহার ইসলাম সায়েম।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার বিভিন্ন নির্জন স্থান এবং বিভিন্ন বসতবাড়ি থেকে চুরি–ছিনতাই হওয়া তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে চোর–ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটের সক্রিয় তিনজন সদস্যকে। চকরিয়া থানার আশপাশের এলাকার আস্তানা থেকে এসব গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আহমেদ নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ। তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত তিনটি চোরাই মোটর সাইকেলসহ ধৃত তিনজন পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে তারা দীর্ঘদিন ধরে এই অপকর্ম করে আসছে। তাদের দলে আরো অনেকেই রয়েছেন। তাই ধৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজুর পর সিন্ডিকেটের বাকী সদস্যদের শনাক্ত করতে আদালতে রিমাণ্ডের আবেদন করা হবে। চকরিয়া থানা পুলিশের একজন উপ–পরিদর্শক (এসআই) বলেন, গত দুইমাসে কম করে হলেও ২০টি মোটর সাইকেল চুরি বা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড যারা করছে তাদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। অবশ্য তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এসব অপকর্মের আশ্রয়দাতাদের ব্যাপারেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বার বলেন, রাতের বেলায় চোর–ছিনতাইকারীদের অপতৎপরতা রোধে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। মহাসড়কেও তৎপরত থাকতে থানা পুলিশের মোবাইল টিমকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরশহর চিরিঙ্গা ও আশপাশের এলাকার বসতবাড়ি, মহাসড়কের নির্জন স্থানকেই এসব অপরাধকর্ম সংঘটের জন্য বেছে নিচ্ছে তারা। এতে প্রতিদিন কোনো না কোনো স্থানে সংঘটিত হচ্ছে মোটর সাইকেলসহ আরোহীদের কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসছে– মোটর সাইকেল চোর–ছিনতাইকাজে সরকার দলের সহযোগী সংগঠনের পরিচয় বহনকারী দুর্বৃত্তরা এই অপকর্ম করে যাচ্ছে। এই অবস্থায় থানা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এই সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করার জন্য মাঠে তৎপর হয়েছেন। পুলিশ জানায়, আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের সক্রিয় সদস্যরা কক্সবাজার, বান্দরবান এবং চট্টগ্রাম জেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অন্যান্য সক্রিয় চোরচক্রের সহায়তায় উপরোক্ত গাড়িসমূহ চুরি করে নিজেদের দখলে রাখে। এমনকি গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর আংশিক পরিবর্তন করে ক্রয়–বিক্রয় করে থাকে পরবর্তীতে।