শাহানুরি, ১৩ বছরের এ কিশোরী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বর্তমানে পক্ষাঘাতগ্রস্ত। এ অবস্থায় থেকেও বড়দিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অংকন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে সে। শাহানুরির বাবা মোহাম্মদ জাকারিয়া হুসেন জানিয়েছেন, তার মেয়ে ক্রিসমাস কার্ডের যে ডিজাইন অংকন প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল, সেটিতে সে হাতের ব্যবহার করেনি। এমনকি পা দিয়েও সে কার্ডের ডিজাইন করেনি। সম্পূর্ণ মুখ দিয়ে এঁকে শাহানুরি বিজয়ী হয়েছিল। খবর বাংলানিউজের।
তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালে সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর শাহানুরির শরীর অসাড় হয়ে পড়ে। ওই দুর্ঘটনার পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে শাহানুরির বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার হয়। গত ছয়মাস আগে মেয়েকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যান জাকারিয়া। এখন তারা ওয়েস্ট মিডল্যান্ডে বসবাস করছেন। সেখান থেকেই ওয়ালসাল ম্যানর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিল শাহনুরি। তাকে এখন অক্সফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ১২ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসা জাকারিয়া হুসেন বলেন, ছয় মাস হলো আমি মেয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসেছি। সিলেটে থাকা অবস্থায় একদিন রিকশা থেকে পড়ে যায় শাহনুরি। এ ঘটনায় সে তার পুরো শরীরে আঘাত পায়। মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়ায় আমার মেয়ে আজ পক্ষাঘাতগ্রস্ত। সে শুধুমাত্র মুখ ও মাথা নাড়াতে পারে।
শাহনুরির প্রথম পছন্দ পেইন্টিং। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সে তার দাদুর সাহায্য নিয়েছিল। এনএইচএস থেকে আয়োজিত প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওয়ালসাল ম্যানর হাসপাতালে। শাহনুরিরের প্রথম স্থান অর্জন হাসপাতালের কর্মকর্তা–কর্মীদের মধ্যে আনন্দ বয়ে এনেছে বলেও জানান জাকারিয়া। মেয়ের এমন অর্জনে বেশ খুশি জাকারিয়া। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমি রেনডিয়ারসহ বেশ কয়েকটি বড়দিনের কর্মকাণ্ডে যোগ দিয়েছি। আমি পক্ষাঘাতগ্রস্ত বহু শিশুকে দেখেছি। তারা অসুস্থ, কিন্তু তাদের জীবন এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তারা তাদের পছন্দের কাজগুলো চাইলেই করতে পারে।
ওয়ালসাল হেলথকেয়ার নামে দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে ওই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হয়েছিল। প্রতিযোগীদের বলা হয়েছিল হামফ্রে বিয়ার মাসকট, একটি স্নোম্যান ও ক্রিসমাস ট্রি আঁকতে। এতে জয়ী হয়ে শাহানুরি দাতব্য সংস্থা থেকে রঙিন কলম, ক্রেয়ন ও বইয়ে ভরা একটি বড় হ্যাম্পার পুরস্কার পেয়েছে। দ্বিতীয় পুরস্কার জিতেছে ইসলা ড্যামস নামে এক শিশু।