বাংলাদেশের মতো একটি অতি জনবহুল দেশের জন্য ডিজিটাল ও জ্ঞানভিত্তিক রূপান্তরের প্রধানতম কৌশল হবে এর মানবসম্পদকে সবার আগে ডিজিটালে রূপান্তর করা। নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থার সহায়তায় জ্ঞানকর্মী বানানোর কাজটাই আমাদের করতে হবে। বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবিলম্বে জ্ঞানকর্মী সৃষ্টির কারখানা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। পাঠক্রম, পাঠদান পদ্ধতি, মূল্যায়ন সকল কিছুকে ডিজিটাল করেই এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব। আর এ লক্ষেই গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থার বিপরীতে সুপরিসর ক্যাম্পাস,প্রশস্ত খেলার মাঠ এবং মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির শিক্ষাব্যবস্থাপনার সম্মিলনে নগরীর অভিজাত পাঁচলাইশ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ডিজিটাল বিদ্যাপীঠ স্কুল অব সায়েন্স, বিজনেস এন্ড হিউমেনিটিজ (SSBH)।
সময়ের পরিক্রমায় সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত( EIIN-137766 ) ইংরেজী ভার্সনে (ন্যাশনাল কারিকুলাম, প্লে থেকে নবম শ্রেণি) পরিচালিত স্কুলটি শতভাগ পাশসহ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। উপরন্তু ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩২ জনের A+ প্রপ্তি এই স্কুলটির প্রতি সচেতন অভিভাবকদের আস্থা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছেন নগরীর স্বনামখ্যাত আন্তর্জাতিক মানের ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ সেন্টার এক্সিকিউটিভ’স কেয়ার- এর প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মেহরাব মাসুক এমবিএ(আইবিএ)। স্কুল পরিচালনায় রয়েছেন, বৃটেন হতে ব্যাচেলর অব এডুকেইশন এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ইন এডুকেইশন ডিগ্রীধারী লন্ডনের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ মিস ফাহিমা জিসান।
কেন SSBH?
একজন অভিভাবক সন্তানের ভবিষ্যত গড়তে কেন SSBH -কে বেছে নেবেন? এই প্রশ্নের জবাবে অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম বলেন, ছোট্টমণিরা শিখবে প্রকৃতি থেকে এবং তা তাদের সহজাত খেলাধূলোর আনন্দে।তাই স্কুল ক্যাম্পাস ঘিরে প্রশস্ত খেলার মাঠ, সবুজ গাছপালার সমারোহের মাঝে আনন্দময় ও সৃজনশীল পরিবেশে হাতেখড়ির সকল আয়োজন রয়েছে এখানে। শিশুবান্ধব সব উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের প্রতিটি ক্লাসরুম।
ছোট্ট মণিদের কাছে সবচেয়ে মজার হলো মাল্টিমিডিয়ার সাহায্যে ডিজিটাল স্ক্রিনে দারুণসব ছড়া, গান, ছবি ও ডকুমেন্টারি উপভোগ করা। রং ঝলমল নানা এ্যানিমেশান, পাজল ও ভিডিও ক্লিপের সাহায্যে সে শিখে নিচ্ছে চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠা বর্ণমালা ও সংখ্যার নানা পাঠ। পাঠ্য বিষয়কে হৃদয়গ্রাহী করতে বিজ্ঞান ভিত্তিক ও সামাজিক ফিল্ম এবং ডকুমেন্টরী প্রদর্শনের ব্যবস্থা রেখেছি আমরা। রয়েছে অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরসহ ডিজিটাল শিক্ষার সব উপকরণ। বাস্তবমুখী শিক্ষালাভের লক্ষ্যে আমরা শিশুদের জন্য প্রতি সপ্তাহে ফ্রুট ডে, টয় ডে, ড্রেস ডে ইত্যাদি নামের বিশেষ ক্লাস রেখেছি যেখানে ফল বা খেলনাটি সম্পর্কে সবাই কিছু বলবে। ফলে মুখস্থবিদ্যার প্রচলিত গন্ডী হতে মুক্তি পেয়ে আতœবিশ্বাসী হয়ে উঠবে প্রতিটি শিশু যা পরিণত বয়সে তাকে নিয়ে যাবে সাফল্যের শিখরে।
ডিজিটাল পাঠব্যবস্থাপনা :
প্রতিষ্ঠাতা মেহরাব মাসুক জানান,এখানে রয়েছেন প্রথম লেভেলে দক্ষ ও মেধাবী তরুণ শিক্ষক এবং দ্বিতীয় লেভেলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ প্রবীন শিক্ষক। মেধাবী তারুণ্যের স্ফুরণে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে জ্ঞানের গতিপথ। আর প্রবীণ শিক্ষকের দিকনির্দেশনায় আরোহণ করবে সাফল্যের চূড়ায়।পঠিতব্য বিষয়ের উপর প্রস্তুতকৃত পাঠপরিকল্পনা ও পাঠ উপকরণের সমন্বয়ে পাঠদান করেন শিক্ষক। যেমন- গাছের পাতা পড়াতে শিক্ষক সত্যিকারের সবুজ একটি পাতা বা চুম্বক পড়াতে লোহার একটি চুম্বক নিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেন। মোট কথা পুরো ক্লাসটা থিওরী নির্ভর না হয়ে হয় প্র্যাকটিক্যাল ওরিয়েন্টেড। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে অডিও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে পাঠে কী কী আছে। ফলে সাধারণ মানের শিক্ষার্থীর কাছেও দুর্বোধ্য বলে কোন পাঠ থাকেনা। অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা হয়। তাই শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে হয় না ।
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম:
ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে প্রচন্ড গুরুত্ব দেয় SSBH । সপ্তাহের প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণীর জন্য রয়েছে কালচারাল ক্লাস। সংস্কৃতি বিষয়ক শিক্ষকের তত্বাবধানে আবৃত্তি, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা, গান, নাটক ইত্যাদি বিবিধ শিল্পকলার চর্চা করছে ছাত্র-ছাত্রীরা। প্লে গ্রাউন্ডে চলে নিয়মিত ক্রীড়া চর্চা। রয়েছে বাস্কেটবল, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন গ্রাউন্ড।অবসর সময়টুকুতে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠে শিশুকিশোররা। ।ইনডোর গেমসে রয়েছে পুল,কেরম,দাবা, টেবিল টেনিস ইত্যাদি।রয়েছে বয়স্কাউট ও গার্লসগাইড কার্যক্রম। মহান একুশে, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস,শেখ রাসেল দিবস,জাতীয় শোক দিবস,পহেলা বৈশাখ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সাড়ম্বরে উদ্্যাপনসহ দেশীয় সংস্কৃতির আবহে গড়ে তোলা হয় নুতন প্রজন্মকে। আর মাতৃভাষা বাংলা ও সংস্কৃতি চর্চার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয় যাতে নিজের শেকড়কে ভুলে না যায়। প্রতি বছর দর্শনীয় স্থানে শিক্ষা সফর ও জাঁকজমকপূর্ণ বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ছাত্রছাত্রীরা সারা বছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে।
নৈতিক শিক্ষা:
SSBH এ নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষার উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়। ক্লাস ওয়ানে উঠার আগেই আরবির সকল পাঠ শিশুদের শিখানো হয়। সকল ধর্মাবলম্বী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ধর্মদর্শনপূর্ণ নৈতিকতার পাঠ সিলেবাসভুক্ত রয়েছে।
গ্লোবাল সিটিজেন :
কেবল পাঠ্য বিষয়ই নয় নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল সিটিজেনরূপে গড়ে তুলতে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের IELTS,TOEFL, SAT ভূক্ত প্রয়োজনীয় কোর্স সমূহ করিয়ে দেয়া হয় যাতে ভবিষ্যতে দেশ বিদেশে উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হয়।
বিশেষ করে রোবোটিকস ক্লাব এখন SSBHএর সেরা আকর্ষণ।ছাত্রছাত্রীরা এখানে নিয়মিত হাতেকলমে দক্ষ প্রশিক্ষকের কাছে রোবট প্রস্তুতির কৌশল শিখছে।প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিজ্ঞান মেলা, যেখানে নানা উদ্ভাবন ও প্রকল্প নিয়ে হাজির হয় খুদে বিজ্ঞানীরা।
পরিশেষে এসএসবিএইচ স্কুলের অধ্যক্ষ শেখ মো: আব্দুস সেলিম বলেন,এটি বন্দর নগরীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি বিদ্যাপীঠ যেখানে অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রাজ্ঞ শিক্ষকগণ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে নিষ্ঠার সাথে পাঠদান করেন নিয়মিত কোর্স প্লান, হোম ওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ইত্যাদির মাধ্যমে । মূল্যায়নের জন্য নেয়া হয় ক্লাস টেষ্ট, চ্যাপটার টেস্ট ও মান্থলি টেস্ট। সকল ফলাফল সার্বক্ষণিক জানতে পারেন অভিভাবক।ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি ও বায়োলজী ল্যাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য স্বতন্ত্র মাইক্রোস্কোপ, এ্যাপ্রোন, গ্লাভস, বায়োলজিক্যাল স্পেসিমেন সত্যিই বিরল। ইন্টারনেট সংযোগসহ অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব তথ্য প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত হতে বিশেষ সহায়ক হবে।তাই আন্তরিক ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে পরিপূর্ণ শিক্ষার ফলে SSBH এর শিক্ষার্থীরা আদর্শ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন উপযুক্ত নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে বলে আমার বিশ্বাস।” প্লে গ্রুপ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে ঝর্ণা হাউস, ২২,পাঁচলাইশ,( চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেইন গেইটের বিপরীতে) – এই ঠিকানায় এবং ssbh ফেসবুক পেইজে এবং ০১৮৮১-৫৬৪৪৪০,০১৭১১-০৩৯০৭০ ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।