আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন আজ

সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

| শনিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আজ শনিবার। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এবারের সম্মেলনে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় তুলে ধরা হবে। এই বিষয়টি সামনে রেখেই সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘উন্নয়ন অভিযাত্রায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়’। খবর বাসসের।
সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চে আসার পর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করবেন দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। এবারের জাতীয় সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর এবং লক্ষাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেবেন। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে। দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় প্রসঙ্গে সম্মেলন স্থল পরিদর্শনে গিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময়ই একটি স্মার্ট দল। আওয়ামী লীগই সবসময় প্রথমে ভাবে জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে কি করতে হবে। আওয়ামী লীগের হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশও আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হবে।’ জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ১১টি
উপ-কমিটি কাজ করছে। প্রথা অনুযায়ী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও সদস্যসচিব সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের এই কর্মযজ্ঞ সফল করতে রাত-দিন পরিশ্রম করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ। দফায় দফায় বৈঠক, দাওয়াতপত্র বিতরণ, গঠনতন্ত্র সংযোজন, বিয়োজন, ঘোষণাপত্র পরিমার্জন, মঞ্চ সাজসজ্জাসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ প্রায় শেষ করেছেন।

সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, এবারের সম্মেলন সাদামাটা হলেও নেতা-কর্মী কমবে না। সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের ঢল নামবে। দেশের মানুষ কষ্টে আছে ভেবেই এবার সম্মেলনে সাজসজ্জা করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন। দেশের মানুষের কথা ভেবেই এবারের সম্মেলন সাদামাটাভাবে করা হচ্ছে।
যুক্ত হলো থিম সং :
এদিকে আওয়ামী লীগের ৭৩ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ২২তম সম্মেলনে যুক্ত হয়েছে ‘থিম সং’। প্রথমবারের মতো এই মুক্তিবোধ আর প্রগতিবাদী রাজনীতির মূলস্বরকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে ‘থিম সং’। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে থিম সংটি আপলোড করা হয়েছে।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের গীতিকাব্যে দলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো সৃষ্ট দলের থিম সংয়ে সুর তুলেছেন দেশের খ্যাতনামা কয়েকজন কণ্ঠশিল্পী। ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পরিকল্পনায় গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন পাভেল আরিন।
গানটিতে মোহনবীণা বাজিয়েছেন গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ভারতের কিংবদন্তী শাস্ত্রীয় সংগীত ব্যক্তিত্ব পন্ডিত বিশ্ব মোহন ভাট। কণ্ঠ দিয়েছেন পান্থ কানাই, চন্দনা মজুমদার, দিলশাদ নাহার কণা ও মাশা ইসলাম। ইয়াসির মাহমুদ খানের সমন্বয়ে চিত্র পরিচালনা করেছেন ইশতিয়াক মাহমুদ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল, যার নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। দলের দীর্ঘ ৭৩ বছরের ইতিহাসে অসংখ্য জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। খুঁজলে এক-একটি সম্মেলনে একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন যে কারও চোখে পড়বে। তবে এবারই প্রথম দলের দফতর বিভাগ থেকে একটি থিম সং করা হয়েছে।’ ‘অসাধারণ কিছু করার চিন্তা থেকে ব্যতিক্রমী এই আয়োজন’-এই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অতীতের বিভিন্ন সম্মেলনে সংস্কৃতি বিভাগ থেকে নানা আয়োজন করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের সম্মেলনেও অনেক আয়োজন থাকবে।’
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি গতকাল শুক্রবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডিএমপি গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের একথা বলেন। খবর বাসসের। সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের লক্ষাধিক নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যোগদান করবেন উল্লেখ করে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আপনারা জানেন, অনেকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন নাশের চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। এজন্য আমরা তাঁর নিরাপত্তাকে সব সময় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।’
তিনি বলেন, আগামীকালের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে প্রত্যেকটা গেটে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা হয়েছে। ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হচ্ছে। ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পুরো এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো রিয়েল টাইম মনিটরিং করা হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এন্ড প্রকিউরমেন্ট) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, যুগ্ম ও উপ-পুলিশ কমিশনারগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী পেপার মিল ৬ মাস বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধদেশে আওয়ামী লীগেই শুধু অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা হয় : কাদের