চট্টগ্রামের ১২০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল সোমবার সকালে নগরের থিয়োটার ইনস্টিটিউট চত্বরে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন।
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন অবদান স্মরণ করে সিটি মেয়র বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব চির অম্লান। কারণ দুর্দিনে ভারতই আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দেন। বাংলাদেশি যুবকদের সশন্ত্র ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে। অস্ত্রের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জোয়ানরা অংশ নিয়েও সেদিন যুদ্ধ করেছিল। যেসব ভারতীয় জোয়ান শহীদ হন তাদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, যে চেতনা নিয়ে আমরা মক্তিযুদ্ধে অংশ নিই সে চেতনাকে ধারণ ও লালন করার মধ্য দিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। সে চেতনা লালন না করলে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেই আমাদের সমৃদ্ধি ও প্রগতির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এসময় তিনি বলেন, চেতনা হচ্ছে বিমূর্ত বিষয়। ইতিহাস লেখা যায়। কিন্তু চেতনা লেখা যায় না, ছোঁয়া যায় না। চেতনা হচ্ছে হৃদয়ের প্রোথিত বিষয়, আবেগের বিষয়। তাই যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম সে চেতনাকে ধারণ না করে কখনো এগিয়ে যেতে পারব না।
তিনি বলেন, কিছু কুলাঙ্গার বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। এর ২১ বছর পর দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনেন। তিনি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীন বাংলাদেশে বুকভরে নি:শ্বাস নিতে পারছে। অথচ এর আগে মুক্তিযোদ্ধারা ছিল অবহেলার বস্তু। সবখানেই তাদের অবহেলা করা হত। অর্থের লোভে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নেয়নি। সকল মুত্তিযোদ্ধাকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ভারত সরকার। ভারতের মিত্রবাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিল। তাদের যৌথ আত্মত্যাগে আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ভারত সরকারের আন্তরিক সর্ম্পক ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানেও দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক অটুট রয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চানলনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার একে এম সরোয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হারিস চৌধুরী ও চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর মো. নুরুল আমিন, গোলাম মো. জোবায়ের, নাজমুল হক ডিউক, কাজী নুরুল আমিন, শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, আবদুল মান্নান, আতাউল্লাহ চৌধুরী, শাহেদ ইকবাল বাবু, সংরিক্ষত কাউন্সিলর জেসমিন পারভিন জেসী, রুমকী সেন গুপ্ত, শাহীন আক্তার রোজী।