যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক কোটি টাকার জরিমানা বিধান রেখে জাল নোট প্রতিরোধে আইন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইনের নাম হবে ‘জালনোট প্রতিরোধ আইন-২০২২’। আইনের খসড়া অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রণালয়, মন্ত্রী পরিষদ ও আইনমন্ত্রণালয় হয়ে সংসদে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আইনে পরিণত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ডিপোর্টমেন্ট অব অব কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট’ জালনোট প্রতিরোধ আইন প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করছে। খবর বাংলানিউজের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জাল টাকা শনাক্ত ও রোধে নিজস্ব কোনো আইন নেই। এতদিন প্যানেল কোড ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে জাল নোট রোধ ও শনাক্ত সম্পর্কিত কাজ চলছে। এ সব আইনে জাল নোট সম্পর্কিত মামলা শেষ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। এতে জাল নোট নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই নতুন আইন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
খসড়া আইনে জাল নোট ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রি, মজুদ বা আসল বলে লেনদেন করলেই সে আইনের আওতায় অপরাধী বলে গণ্য হবেন। জানার পরও মুদ্রা জাল করার প্রক্রিয়ার যে কোনো অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকলেই সে অপরাধী হবে। মুদ্রা জাল কাজে ব্যবহার করার জন্য কোনো যন্ত্র, হাতিয়ার, উপাদান বা সামগ্রী প্রস্তুত করা বা প্রক্রিয়ার কোনো অংশ সম্পাদন করা, ক্রয়-বিক্রি বা ব্যবহার, আমদানি-রপ্তানি বা বহন করাও আইনের আওতায় পড়বে।
মুদ্রা জাল করার তথ্য আদান-প্রদানও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। আসল নোটকে জাল বলে বা জাল নোটকে আসল বলে বা মুদ্রা নিয়ে যে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানোও ‘জালনোট প্রতিরোধ আইন-২০২২’ আওতায় অপরাধ বলে গণ্য হবে। জাল টাকা নিয়ে গণমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্তকারীও আইনের আওতায় আসবে। ব্যবস্থা নিতে পারবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। প্রকৃত মুদ্রা ঘষে-মেজে বিকৃত করাও এ আইনের আওতায় অপরাধ হবে। জেনে-বুঝে টাকার ভিন্নভাবে ব্যবহার বা লেনদেন করলেও ওই ব্যক্তি আইনের আওতায় আসবে। টাকার উপরে লেখা, টাকায় ব্যবহৃত প্রতিকৃতি বিকৃত করাও অপরাধ বলে গণ্য হবে।
জাল মুদ্রা তৈরি, মজুদ, বিপণন, পরিবহন করা হচ্ছে বলে তথ্য থাকলে বা মনে হলে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই তল্লাশি বা গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে এ আইনে।
জাল নোট রোধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও জাল নোট-অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের দ্বিগুণ বা এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান থাকছে এ আইনে। অনাদায়ে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বিধান রাখা হয়েছে আইনের খসড়াতে।