হাটহাজারীতে জুয়ার টাকা জোগান দিতে দেড় মাসের এক শিশু সন্তানকে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পাষণ্ড পিতা বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটি উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
জানা যায়, গতকাল বুধবার হাটহাজারী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড আলীপুর গ্রামে মদিনা আবাসিকের সামনে মো. হুমায়ুন তার দেড় মাস বয়সী মাসুম নামের ছেলে সন্তানকে বিক্রি করার ঘটনাটি ঘটে। তিনি একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী ও পেশাদার জুয়াড়ি।
ওই বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি দেখে সন্তানকে ফিরে পেতে বুকফাটা আর্তনাদে ফেটে পড়েন ওই হতভাগা ছেলের মা মর্জিনা বেগম।
হাটহাজারীর পার্শ্ববর্তী এগার মাইল এলাকার এক ব্যক্তি শিশুটিকে টাকার বিনিময়ে প্রতিপালনের জন্য নিয়েছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) শিশুটির নিকটাত্মীয়রা টাকা ফেরত দিয়ে তার কাছ থেকে শিশুটিকে ফিরিয়ে এনেছে। তবে শিশু ক্রেতার নাম না বলার শর্তে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির পিতা পলাতক রয়েছে।
মর্জিনা বেগম বলেন, “আমার দেড় মাস বয়সী ছেলে সন্তানকে আমার স্বামী জুয়ার টাকার জন্য ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। এর আগেও তিনি তার আরেক বউয়ের শিশু সন্তানকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমার কলিজার ধনকে ফিরে পেয়েছি।”
স্থানীয়রা জানান, জুয়ার টাকা জোগান দিতে যে বাবা তার সন্তানকে বিক্রি করতে পারে সে অন্যের বাচ্চাকেও বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করবে না।
এ নিয়ে এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে শিশু বিক্রেতা পিতা পলাতক রয়েছে।
হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন সবুজ বলেন, “শিশু বিক্রির ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি তবে মাসুম নামে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ায় খুবই ভালো লাগছে। এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি।”
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. শাহিদুল আলম বলেন, “টাকার জন্য বাবার সন্তানকে বিক্রি করা আসলে খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেক কাজ করেছি। পৌরসভাও কাজ করেছে। বাচ্চাটি তার মায়ের কোল ফিরে পাওয়ায় আমরা সকলেই আনন্দিত।”