গোলাপবাগ থেকে বিএনপি কর্মীরা সহকর্মীদের ডাকছেন ফেসবুক লাইভে

আজাদী অনলাইন | শুক্রবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:২৭ অপরাহ্ণ

রাজধানী ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েই সেখানে জড়ো হতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে তারা রাজনৈতিক সহকর্মীদের ডাকছেন ফেসবুক লাইভে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ বিএনপিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের কাছে ওই মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে। এর খানিক বাদে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গুলশানে সংবাদ সম্মেলন করে গোলাপবাগ মাঠেই বিভাগীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দেন।

জানা যায়, অনুমতি পাওয়ার পরপরই বিএনপি’র নেতাকর্মীরা গোলাপবাগে জড়ো হতে শুরু করেন, দিতে থাকেন স্লোগান। সন্ধ্যা সোয়া ৫টার মধ্যে মাঠের প্রায় অর্ধেক ভর্তি হয়ে যায়। কয়েকটি দল মাগরিবের নামাজ আদায়ের জন্য মাঠে দাঁড়িয়ে পড়ে। 

ঢাকা ও বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের হাতে রাতযাপনের উপকরণও দেখা গেছে। তাদের বেশিরভাগকেই মোবাইল ফোনে সেখানকার পরিস্থিতি ফেসবুকে ‘লাইভ’ করতে দেখা যায়। 

তবে মাঠটিতে যেমন আলো নেই, তেমনই বাথরুমের ব্যবস্থাও নেই। মাঠের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মী মো. ফাহিম বললেন, “মাঠের গ্যালারির কাজ শেষ হয়েছে তবে বাথরুমের কাজ এখনও শেষ হয়নি। মাঠে কোনো আলোর ব্যবস্থাও নেই।” 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নবিউল্লাহ নবী বলেন, “সমাবেশের স্থান নির্ধারণ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই মাঠ প্রায় ভরে গেছে; কাল কী হবে, তার বলার অপেক্ষা রাখে না।”

নেতাকর্মীদের নিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, “এই সমাবেশের পর সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে বলে ভাবছেন নেতাকর্মীরা। তাই কয়েকদিন আগে থেকেই তারা ঢাকা শহরে জড়ো হতে শুরু করেছেন। সমাবেশের স্থান ঘোষণার পরই তারা গোলাপবাগের দিকে রওনা দিয়েছেন।” 

মাঠে এসে অনেকেই কংক্রিটের গ্যালারির সিঁড়িতে অবস্থান নেয়। ২০/৩০ জন করে জড়ো হয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল করছে। মোবাইল ফোনে ফেসবুক খুলে বক্তব্য দিয়ে প্রচার করছেন অনেকে।

সমাবেশে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল বলেন, “বিকাল ৪টার দিকে অনুমতি পাওয়ার কথাটি শুনেই আমরা চলে এসেছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। আমরা আমাদের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রাজপথে থাকব। সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা ঘরে ফিরব।”

টেলিভিশনে গোলাপবাগে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার কথা শুনেই চলে আসেন জানিয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মেহেদী আলী খান বলেন, “তবে আমাদের উৎসাহে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে কারণ সমাবেশের স্থান নিয়ে ইতোমধ্যেই অনেক কিছু হয়ে গেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির প্রতিবাদে আমাদের সমাবেশ।”

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করিম সরকার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমাবেশস্থলের কথা জানতে পেয়ে পুরান ঢাকা থেকে ছুটে এসেছেন।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি মাজেদা আক্তারও এসেছেন সমাবেশস্থলে।
তিনি বললেন, “গতকাল ঢাকায় এসেছি সমাবেশ উপলক্ষে। আমরা অনেকেই চলে এসেছি, অনেকে পথে আছে। ৪০০ থেকে ৫০০ লোক ইতোমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছে।”

সমাবেশ উপলক্ষে তিন দিন আগে ঢাকায় আসার কথা জানালেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফ।

তিনি বলেন, “সরকারের সম্ভাব্য বাধার কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা আগেই চলে এসেছি। এছাড়া আমার একটি পা নেই। আমি ঝামেলা মোকাবেলা করে আসতে পারব না বিধায় আগেই চলে এসেছি।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদও সন্ধ্যার আগে গোলাপবাগ মাঠের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন।

তিনি বলেন, “সমাবেশের জন্য বিএনপিকে গোলাপবাগ মাঠ ব্যবহারের অনুমতি আগের ‘শর্তেই’ দেওয়া হয়েছে যেমনটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জন্য দেওয়া হয়েছিল। একই রকম নিরাপত্তা বলয় গোলাপবাগেও থাকবে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধটংকাবতী পার হতে গিয়ে পানিতে ডুবে দিনমজুরের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৪