কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাতার কর্তৃপক্ষ তাদের কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছিল। আসর শুরুর আগে স্টেডিয়াম অ্যারেনায় অ্যালকোহলের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে আয়োজকরা। মুসলিম কট্টরপন্থী ছোট্ট দেশটিতে এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্তে ঘোরবিরোধী ছিলেন মূলত ইউরোপিয়ানরা।
তবে ফুটবলের লড়াই মাঠে গড়াতেই আশেপাশের সব নেতিবাচক খবর পেছনে পড়ে যেতে শুরু করে। অনেক দেশ থেকে আসা নারী সমর্থকরা বলছেন, কাতারে তারা খুবই নিরাপদ বোধ করছেন। এলি মলোসন নামে এক নারী ইংল্যান্ড সমর্থক বলেন, আমার ধারণা ছিল, মেয়েদের জন্য এটা ভয়ানক জায়গা। জানতাম না যে এখানে আমি এতটা নিরাপদ থাকব। দেশটিতে ভ্রমণে যাওয়া একজন নারী সমর্থক হিসেবে আমি বলতে পারি যে আমি খুব নিরাপদ বোধ করেছি।
ফুটবলে সেঙিজম দূর করতে কাজ করা হারগেমটু নামের একটি ক্যাম্পেইনের দূত হিসেবে কাজ করেন মলোসন। তারই অংশ হিসেবে তিনি ছিলেন কাতারেও। তবে রক্ষণশীল একটা দেশে মেয়েকে একা ছাড়তে কিছুতেই রাজি ছিলেন না মলোসনের বাবা, তাই তিনিও সঙ্গে যান। কিন্তু পরে দেখা যায়, এটার কোনো দরকারই ছিল না। ১৯ বছর বয়সী মলোসন বলেন, অ্যালকোহল পানে রাশ টানার সিদ্ধান্ত একটা জায়গায় দারুণ কাজে লেগেছে, আর সেটা হলো বিশ্বকাপ প্রাঙ্গণে তুলনামূলক কম বাজে পরিস্থিতির দেখা মিলেছে।
এখানকার সবকিছুই বেশ সাংস্কৃতিক, সুন্দর। আমার মনে হয়, সামাজিকভাবে কাতার রক্ষণশীল হওয়ার কারণেই এমন নিয়ম, এখানে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ। আমার মতে, অ্যালকোহল মানুষকে কিছুটা উগ্র করে তোলে, একে অপরের মাঝে সমস্যার সৃষ্টি করে এবং এ কারণে যৌন নির্যাতনের মতো ঘটনাও ঘটে। ২১ বছর বয়সী আরিয়ানা গোল্ড জানান, মধ্যপ্রাচ্যে সফরের আগে তিনি খুব নার্ভাস ছিলেন, কেননা জানতেন না এখানকার পরিবেশ কেমন হবে।
‘নারীদের জন্য এখানকার পরিবেশ খুব ভালো। আমি ফুটবল খুব ভালোবাসি। দেশে থাকতে আমার ধারণা ছিল, কাতার হয়তো কেবল পুরুষদের জন্য নিরাপদ এবং হয়তো মেয়েদের জন্য এখানে হয়তো ঠিক স্বস্তিকর পরিবেশ নয়। কিন্তু না, আমি এখানে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে আছি এবং এখানকার সবকিছু খুব ভালো।’ এমন করে অনেক নারীই যারা বিশ্বকাপ দেখতে অন্য দেশ থেকে এসেছেন কাতারের পরিবেশকে নিরাপদ মনে করছেন এখন।