ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্রতা কমে এসেছে এবং আসছে শীতের মাসগুলোতেও পরিস্থিতি এমনই থাকবে বলে ধারণা করছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তবে প্রতিকূল এ পরিবেশ সত্ত্বেও কিইভ বাহিনীর একাংশের মধ্যে প্রতিরোধস্পৃহা কমে আসার কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক এভ্রিল হেইনস। উভয়পক্ষই এখন বসন্তে পাল্টা-আক্রমণের লক্ষ্যে নিজেদের পুনরায় প্রস্তুত, সরঞ্জাম সরবরাহ বাড়ানো ও বাহিনী পুনর্গঠনের চেষ্টা করতে পারে, শনিবার হেইনস এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। মুখোমুখি যুদ্ধ ‘ধীর লয়ে’ চললেও রাশিয়া ইউক্রেইনের সংবেদনশীল বিদ্যুৎ স্থাপনায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। খবর বিডিনিউজের।
ইউক্রেনে এই যুদ্ধ নয় মাস ধরে চলছে, শুরুর দিকে রাশিয়া যে পরিমাণ অংশ নিজেদের কব্জায় নিয়েছিল, ইতিমধ্যে তার অর্ধেকের বেশি তাদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত এক আলোচনায় হেইনস বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধের বেশিরভাগটাই এখন হচ্ছে বাখমুতের আশপাশ ও পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কে।
গত মাসে খেরসনের পশ্চিমাঞ্চল থেকে রুশ বাহিনী সরে যাওয়ার পরই মূলত যুদ্ধের তীব্রতা কমে এসেছে, বলেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এ পরিচালক। আমরা সংঘাতের লয় কমে এসেছে বলে দেখছি। সামনের মাসগুলোতেও এমনটাই দেখতো পাবো বলে ধারণা করছি আমরা, বলেছেন তিনি।
শীতের এই সময়ে কিইভবাহিনী পরবর্তী আক্রমণের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি সারতে পারবে বলেও মনে করছেন তিনি। অন্যদিকে রুশ সেনারা তাদের গোলাবারুদ ও মনোবল সংকট, রসদ সরবরাহ, সরঞ্জাম ও অন্যান্য উদ্বেগ এ সময়ের মধ্যে কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা, তা নিয়ে হেইনসের সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। রুশ সেনারা এখন যে পরিমাণ প্রতিবন্ধকতার মুখে রয়েছে তার পুরো চিত্র নেই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে বলেই ধারণা মার্কিন গোয়েন্দাদের, বলেছেন তিনি।
এদিকে শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, পশ্চিমারা রাশিয়ার তেলের যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তা মোটেও কার্যকর কিছু হয়নি এবং এটি রাশিয়ার অর্থনীতিকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলবেও না। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির সাত দেশের সংগঠন জি৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অস্ট্রেলিয়া শুক্রবার সমুদ্র পথে রপ্তানি করা রাশিয়ার তেলের মূল্য ব্যারেল প্রতি ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। তেল রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় কমানোই তাদের উদ্দেশ্য।
এরমাধ্যমে তারা রাশিয়ার অর্থনীতিকে দুর্বল করে ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর অর্থের যোগান কমাতে চাইছে। সোমবার থেকে তেলের দামের নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, মস্কো এ ধরনের পদক্ষেপের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল এবং রাশিয়া এই বেঁধে দেওয়া দামে তেল বেচবে না।