বেতন ভাতা বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করা নৌ যান শ্রমিকরা ৩৬ ঘণ্টা পর কাজে যোগ দিয়েছে। নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেয় শ্রমিকেরা। গতকাল সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর এবং কর্ণফুলী নদীর ঘাটসহ সারাদেশে নৌ পরিবহন শ্রমিকরা কাজ শুরু করেন। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলস্থ নৌ পরিবহন
অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সরকার, মালিক–শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর নিজামুল হকের সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ চলাচল সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দীন আহমেদ বীর বিক্রম, বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক, আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী আবদুল করিম, বাংলাদেশ নৌ যান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি মোহাম্মদ নবী আলম অংশ নেন। বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর এক হাজার টন ধারণক্ষমতার পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহী জাহাজগুলোর শ্রমিকদের জনপ্রতি মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ১ হাজার টনের বেশি ধারণক্ষমতার জাহাজগুলোতে জনপ্রতি মাসিক দেড় হাজার টাকা অন্তবর্তীকালীন ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নৌ যান শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে।
লিখিত বিবৃতিতে বিষয়টি উল্লেখ না থাকলেও একজন শ্রমিক নেতা বলেছেন, অন্তবর্তীকালীন ভাতা এক মাসের জন্য প্রদান করা হবে। এই এক মাসের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে বেতন–ভাতা বৃদ্ধির গেজেট প্রকাশ করা হবে। এক মাসের মধ্যে বিষয়টির সুরাহা করা না হলে আমরা আবারো আন্দোলনে যাবো। উল্লেখ্য, ১০ দফা দাবিতে নৌ পরিবহন শ্রমিকেরা গত শনিবার মধ্যরাত থেকে ধর্মঘট শুরু করলে অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন খাতে স্থবিরতা দেখা দেয়। সরকারি উদ্যোগে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর ধর্মঘট স্থগিত করে শ্রমিকেরা গতকাল সন্ধ্যা থেকে কাজে যোগ দিলে ৩৬ ঘণ্টা পর অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন সেক্টর সচল হয়ে উঠে।
গতকাল একাধিক জাহাজ মালিক জানিয়েছেন, শ্রমিকদেরকে আপাতত অন্তবর্তীকালীন ভাতা দেয়া হবে। ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের এই সিদ্ধান্তের পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে শ্রমিকেরা কাজ শুরু করেছে।
এদিকে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, কর্মসূচি প্রত্যাহার নয়, স্থগিত করা হয়েছে। আগামী এক মাস আমরা বাড়তি খোরাকি নিয়ে কাজ করবো। কিন্তু এক মাসের মধ্যে বেতন ভাতার বিষয়টি স্থায়ীভাবে নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় আবারো আমরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হবো।