চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড নানা ধরনের প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড এবং জলাবদ্ধতাজনিত সমস্যা। সম্ভাব্য এসব বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঝুঁকির মাত্রা ও প্রকৃতি নিরুপণ ও ঝুঁকি মোকাবেলায় আপদকালীন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। ‘মাল্টি হ্যার্জাড কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ফর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ শীর্ষক পরিকল্পনাটি প্রণয়নে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেভ দ্যা সিলড্রেন ও ইপসা সহযোগিতা করছে।
গতকাল সকালে টাইগারপাসস্থ নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আপদকালীন পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড এবং জলাবদ্ধতাজনিত ঝুঁকির বিভিন্ন দিক ও ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক কার্যাবলী তুলে ধরা হয়। সভায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহ জালাল মিশুক ‘মাল্টি হ্যার্জাড কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ফর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ এর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনটির তথ্য অনুযায়ী, চসিকের ২০টি ওয়ার্ড ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। একইভাবে ১১টি ওয়ার্ড ভূমিধস বির্পযয়, পাঁচটি ওয়ার্ড অগ্নিকাণ্ড বিপর্যয় এবং ২২টি ওয়ার্ড জলাবদ্ধতাজনিত ঝুঁকিতে রয়েছে।
‘মাল্টি হ্যার্জাড কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ফর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ অবহিতকরণ সভায় জানানো হয়, পরিকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবার ও সমাজ পর্যায়ে দুর্যোগের ঝুঁকি সম্পর্কে গণসচেনতা সৃষ্টি ও সকল প্রকার ঝুঁকি হ্রাসকরণে পরিবার, সমাজ, ওয়ার্ড কাউন্সিল ও সিটি কর্পোরেশন এবং প্রশাসন পর্যায়ে বাস্তবসম্মত উপায় উদ্ভাবন করা। স্থানীয় উদ্যোগ যথাসম্ভব স্থানীয় সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও ব্যবস্থাদির বাস্তবায়ন পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন। অপসারণ, উদ্ধার, চাহিদা নিরূপণ, ত্রাণ ও তাৎক্ষণিক পুনর্বাসন ব্যবস্থার জন্য স্থায়ীভাবে প্রণীত পরিকল্পনার অনুশীলন ও প্রয়োগ। একটি নির্দিষ্ট এলাকা এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কৌশলগত দলিল তৈরি করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও সংশ্লিষ্ট খাতের (সরকারি, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় এনজিও, দাতা সংস্থা, ইত্যাদি) জন্য একটি সার্বিক পরিকল্পনা হিসেবে কাজ করবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশিষ্ট অংশীদারদের পরিকল্পনা প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে নির্দেশনা প্রদান করবে।
অবহিতকরণ সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রশিদুল হাসান, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, সিডিএ’র উপ-প্রধান নগরপরিকল্পনাবিদ মো. আবু ইসা আনসারী, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসীম, পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী, চান্দগাঁও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এসারুল হক, প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, চসিকের নগরপরিকল্পনাবিদ স্থপতি আবদুল্লাহ আল ওমর, সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম, ইপসার নাসিমা বানু।