কাতার বিশ্বকাপে ধাক্কা খেয়ে শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর দলটি যেন লা জওয়াব হয়ে গিয়েছিল। কোনও সাংবাদিক সম্মেলনও করেননি মেসিরা। তবে মেক্সিকোকে হারিয়ে ভক্তদের আশা জাগিয়ে তোলার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন লিওনেল মেসি। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক পরিস্কার জানিয়ে দেন, এ বার শুরু আসল বিশ্বকাপ। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপ খেলতে আসা আর্জেন্টিনা ছন্দ খুঁজে পেয়েছে মেক্সিকো ম্যাচের ৪৪ মিনিট থেকে। তাদের এই ছন্দই বিশ্বকাপ প্রতিপক্ষদের ঘুম তাড়িয়ে দেবে। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘আজ থেকে আর্জেন্টিনার আসল বিশ্বকাপ শুরু হল। নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল। ফুটবলপ্রেমীদেরও বিশ্বাস রাখতে বলব। আমরা সেটাই করেছি, যেটা আমাদের করার দরকার ছিল। আমাদের সামনে কোনও দ্বিতীয় পছন্দ ছিল না। আমাদের জিততেই হত। আমরা শুধু নিজেদের উপরই ভরসা করেছিলাম।’ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে জয়ে দলের দমবন্ধকর পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নিশ্চিন্ত থাকার
উপায় নেই। মেনে নিয়েছেন শনিবার প্রথমার্ধে তারা ভাল খেলতে পারেনি।
মেসি বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে প্রত্যাশা মতো খেলতে পারিনি আমরা। আমাদের অবশ্যই শুরু থেকে ভাল খেলা উচিত ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা মাথা ঠান্ডা রেখে খেলার চেষ্টা করেছি। তাতে গোল এসেছে। খেলাও অনেক ভাল হয়েছে। আমরা যে ভাবে খেলি, ঠিক সে ভাবেই খেলতে পেরেছি।’ মেক্সিকোর বিরুদ্ধে জয় সুযোগ এনে দিয়েছে অর্জেন্টিনার সামনে। এই সুযোগ হারাতে চান না মেসি। বিশ্বকাপের দু’টি ম্যাচেই গোল করেছেন নিজে। দলের পারফরম্যান্সেও খুশি আর্জেন্টিনার অধিনায়ক। বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট নিশ্চিত করতে হলে আর্জেন্টিনার যে সমীকরণ প্রয়োজন তা হলো ৩০ নভেম্বর পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে মেসিদের অবশ্যই জিততে হবে।
যদি তারা পয়েন্ট নষ্ট করেন তবে তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে মেক্সিকো-সৌদি আরব ম্যাচের ফলের দিকে। সৌদি আরবের আছে ২ খেলায় ৩ পয়েন্ট। আর মেক্সিকোর সমান খেলায় ১ পয়েন্ট। বাঁচা-মরার ম্যাচে প্রথমার্ধের বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। সামনে থেকে দলকে পথ দেখালেন অধিনায়ক মেসি। খেলার ৬৪ মিনিটে ডান দিক থেকে ডি মারিয়ার পাসে বলটা বাঁ পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিলেন লিওনেল মেসি। একটু জায়গা বানিয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শট। ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পেলেন না গোলরক্ষক গিয়েরমো ওচোয়া।
মেসি চমৎকার গোলটি করার পর সতীর্থের গোলেও রাখলেন অবদান। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নেমে এনসো ফের্নান্দেসের করা গোলটিও ছিল দেখার মতো। মেসির পাস পেয়ে বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে এক ঝটকায় সামনের প্রতিপক্ষের বাধা এড়িয়ে নেওয়া শটে বল বাঁক খেয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে চলে যায় কাক্সিখত ঠিকানায়। দল ছন্দ পেয়ে যাওয়ায় মেসি এখন আর অন্য দিকে তাকাতে চান না। শুধু সামনে তাকাতে চান।