নৌযান শ্রমিকদের আচমকা কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর ও কর্ণফুলী নদীর ঘাটে অবস্থানকারী জাহাজে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন রুটে পণ্য পরিবহনও।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের ডাকে গতরাত ১২টা ১মিনিট থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতির ফলে এ অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
সূত্র জানায়, শ্রমিকদের কর্মবিরতির ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অপেক্ষমান মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাসে নিয়োজিত লাইটার জাহাজ, অয়েল ট্যাংকারসহ প্রায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
কিছু কিছু লাইটার জাহাজে কাজ চললেও শ্রমিক নেতারা জোর করে তা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সদস্য সচিব মো. নূর ইসলাম (ড্রাইভার) সাংবাদিকদের জানান, যতদিন ১০ দফা দাবি না মানবে ততদিন শ্রমিকদের আন্দোলন চলবে।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামও একই সুরে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা বেতন, কর্মরত অবস্থায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, ভারতীয় লাইনে প্রটোকলে ল্যান্ডিং পাস ইস্যুসহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতি চলছে।
লাইটার জাহাজ, ট্যাংকার, যাত্রীবাহী লঞ্চ এ কর্মবিরতির আওতায় রয়েছে। লাইটার জাহাজ মালিকদের সংগঠন ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা গেছে, কর্মবিরতির কারণে লাইটার জাহাজ রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে বহির্নোঙরে যেতে পারেনি।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি :
নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়াসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌ-পথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ করা, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেওয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব প্রকার হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ শতাংশ কার্যকর করে সব লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
উপরোক্ত দাবিগুলো মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও শ্রমিক নেতারা দাবি করেন।