এটি সর্বজনবিদিত যে সভ্য বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিচর্যায় নির্বাচন একটি অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। উন্নত-উন্নয়নশীল-অনুন্নত সকল দেশসমূহে চলমান সরকারের অধীনে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সাংবিধানিক-নৈতিক প্রণিধানযোগ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। গণতন্ত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ক্ষমতাসীন দল ও শক্তিশালী বিরোধী দলের পারস্পরিক সমঝোতা-সহযোগিতা-সম্প্রীতি ও শিষ্টাচার পরিপূর্ণ আচার-আচরণ গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থবহ করে তুলে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ-সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজনে সরকারের ভুলত্রুটিগুলো নৈর্ব্যত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরে ইতিবাচক-গঠনমূলক সমালোচনায় ঋদ্ধ হতে পারে সরকারের দেশপরিচালনায় অনন্য সাফল্য। চর দখলের মতো ক্ষমতা দখলের কোন ব্যবস্থাই আধুনিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য নয়। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং ভোটাধিকার প্রয়োগে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের উপর বর্তায়। দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ কিংবা দেশীয় রাজনীতিকদের বিদেশিদের কাছে ধরনা দেওয়া নতুন কোন বিষয় না হলেও, দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিদেশি দূতাবাসকেন্দ্রিক হওয়ার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের রাজনীতিতে প্রায় প্রতিটি দলের বিরুদ্ধে কমবেশি বিদেশমুখিতার অভিযোগ রয়েছে। এই সুযোগেই বিদেশিরা অনধিকার চর্চায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে।
অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোট ও মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত উন্নত-উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের প্রকাশ্যে কূটনীতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কার্যকলাপে জাতি যারপরনাই উদ্বিগ্ন-আশঙ্কিত। আগামী নির্বাচনে তারা সব দলের অংশগ্রহণের পাশাপাশি দাবি তুলেছে স্বচ্ছ নির্বাচনের। আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এটিকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত-অনভিপ্রেত হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন। তাদের মতে প্রত্যেকটি দেশেরই কিছু গোপনীয়তার বিষয় থাকে তা কূটনৈতিক মহলে যাওয়া উচিত নয়। বিদেশি কূটনীতিকদের আচরণ জেনেভা কনভেনশন দ্বারা সীমাবদ্ধ বিধায় তাদের এর মধ্যে থাকা একান্ত বাঞ্চনীয়। বৈশ্বিক মহামন্দার ক্রান্তিকালে অদম্য অগ্রগতিতে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের বিষয়ে বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রমিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের দৌঁড়ঝাপ জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জিত করে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা যেন রাজনীতিবিদদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। উপরন্তু দেশের তথাকথিক কিছু রাজনৈতিক দল-নেতারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়ে তাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে প্রবল জনশ্রুতি রয়েছে। এতে কেউ লাভবান না হলেও; সামগ্রিকভাবে দেশ-জাতি এবং দেশের স্বাধীন স্বত্তা-সার্বভৌমত্ব-আত্মমর্যাদাবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। বিশ্বের উন্মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দেশের বন্ধুর প্রয়োজন থাকলেও কর্তৃত্ববাদী বন্ধুর প্রয়োজনীয়তা কোনভাবে কাম্য হতে পারে না। এটি দেশের প্রতিটি রাজনীতিবিদ, সুশীল-নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের বোধদয়ে জাগ্রত হতে হবে।
প্রাসঙ্গিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘নির্বাচন এলেই আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে কিছু কথা আসে। সেটি অতীতেও হয়েছে, এবারও হচ্ছে। কিন্তু কোনভাবেই বিদেশিদের আমাদের দেশীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ নয়। বাংলাদেশের কিছু নিজস্ব বিষয় রয়েছে সেটি দেশের জনগণই ঠিক করবে। আমরা দেখেছি ভারত-ফিলিপাইনসহ অনেক দেশেই অনেক কিছু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। কিন্তু সেখানে বিদেশিরা তেমন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ কী চায় তা দেশের নাগরিকরা ঠিক করবে। যেমন অতীতেও আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেকগুলো দেশ বিরোধিতা করেছে, আবার কেউ পক্ষেও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ভালো-মন্দ বাংলাদেশকে ঠিক করতে হয়েছে জীবন-রক্ত-ইজ্জত দিয়ে। এখন বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে এ রকম তৎপরতা কোনোভাবেই কূটনীতিকদের উচিৎ নয়।’ চীনের সরকারি দল কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস নিয়ে ঢাকায় বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আাসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশি বন্ধুদের তৎপরতা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘বাংলাদেশ কেন, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চীন কখনোই হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। তবে এদেশের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক-সামাজিক স্থিতিশীলতার ধারাটা অব্যাহত রাখা জরুরি বলে আমরা মনে করি।’ চলতি বছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সম্মানিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের আহ্বান জানানো দেশের জন্য অকল্যাণ ডেকে আনবে বলে মন্তব্য করেছেন। উক্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। বাইরের দেশের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করলে নিজের দেশকেই ছোট করা হয়। আমাদের দেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাইরের কারোর কথা বলার কথা না। এটি আমার দেশের মর্যাদার ব্যাপার, যা জাতির জন্য মর্যাদাপূর্ণ নয়। অন্য কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে যেমনি আমার মন্তব্য করা দায়িত্ব নয়, তেমনি একই প্রক্রিয়া অন্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা হয়ত কোনো কোনো ব্যাপারে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে, আমাদের দেশেও নির্বাচন বিতর্কের উর্ধ্বে না। যেসব দেশে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ করে দিচ্ছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান কিংবা লিবিয়ার দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।’
চলতি বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ সফরকারী জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে সরকারের মন্ত্রীদের নিকট বহুবিধ বিষয়ে ব্যাখ্য চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি জানান, ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপিত বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিবেদনে নাগরিক সমাজের গুরুত্ব সীমিত করা, ক্রমবর্ধমান নজরদারি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রতিশোধমূলকভাবে বাকস্বাধীনতা হরণ করার বিষয়গুলো প্রতিফলিত হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মী, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের সংগঠন ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতার পাশাপাশি নাগরিক ও রাজনৈতিক সমাজের ভূমিকা জোরদার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জন্য নির্বাচনের সময়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্যরা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করা ছাড়াই যাতে প্রতিবাদ সমাবেশসমূহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, সে জন্য তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, নির্যাতনের অভিযোগের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপত্তা খাতের সংস্কারের পাশাপাশি এসব অভিযোগের বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের সুপারিশ করেন। সচেতন মহল সম্যক অবগত আছেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একে অপরের পরিপূরক হিসেবে একটি অপরটিকে অধিকতর সমৃদ্ধ করে তোলে। গণতন্ত্র ব্যতিরেকে মানবাধিকার যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে সাবলীল-স্বাভাবিক গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করাও দুরুহ ব্যাপার। তথাপিও উন্নত বিশ্বের বহু গণতান্ত্রিক দেশে মানবাধিকার পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত-সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিতকল্পে গৃহীত মানবাধিকার ঘোষণাটি কালের বিবর্তনে আজ বিশ্বব্যাপী প্রচন্ড হুমকির সম্মূখীন। মানবাধিকার আজ মুখরোচক কথা হিসেবে পরিগণিত। ক্ষমতালিপ্সু কতিপয় হিংস্র দানবরূপী মানুষ আধিপত্য বিস্তারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চালাচ্ছে পরিকল্পিত গণহত্যা ও জাতিগত নিধন। পশ্চিমা বিশ্ব তথাকথিত মানবাধিকারের তকমা লাগিয়ে ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। সিরিয়া ও ইয়েমেনের লাখ লাখ নাগরিকের ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষের অসহনীয় কাতরতার দোলাচলে ঘোরপাক খাচ্ছে মানবতা। বিশ্বময় মানবতার ফেরিওয়ালারই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার হরণে ব্যতিব্যস্ত-লীপ্ত রয়েছে।
ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখন্ডে মানবাধিকার পরিস্থিতি আজ চরমভাবে বিপর্যস্ত। ১৯৪৮ সাল থেকে বহু ফিলিস্তিনিরা দেশ থেকে জোরপূর্বক বিতাড়নের মুখে স্বাভাবিক জীবনধারণের অধিকার বঞ্চিত হয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রে উদ্বাস্তু হয়েছে। দেশে অবস্থানকারী ফিলিস্তিনিরা প্রায়শ আগ্রাসী ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতার শিকার হচ্ছে। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ১৫ বছর ধরে দখলদার ইসরাইলের অবরোধের কারণে অবকাঠামো ধ্বংসসহ গাজার মানুষ অতি প্রয়োজনীয় সেবা ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পশ্চিমা রাষ্ট্রের দ্বিমুখী নীতির জন্য অদ্যাবধি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন পরিস্থিতির উন্নতি দৃশ্যমান নয়। বিশ্লেষকদের মতে, একমাত্র ইসরাইলের দখলদারিত্বের অবসানই ফিলিস্তিনে শান্তি আসবে এবং মানবাধিকারের সকল শর্ত পালন সম্ভব হবে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিবেচ্য খোদ যুক্তরাষ্ট্রের গুম, খুন, পুলিশি নির্যাতন নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি দিন দিন বেগতিক রূপ নিচ্ছে। বিশ্বে মানবাধিকারের সবক দেওয়া দেশটিতে নড়বড়ে হয়েছে মানবাধিকার পরিস্থিতি।
আমাদের সকলের জানা মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় কোনো বিদেশি শক্তিই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার দেশ স্বাধীন দেশ। ভারত হোক, আমেরিকা হোক, রাশিয়া হোক, গ্রেট বৃটেন হোক কারো এমন শক্তি নাই যে আমি যতক্ষণ বেঁচে থাকি ততক্ষণ দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে। একদল লোক বলছে মুজিবুর রহমান লন্ডন চলে যাবে। কিন্তু মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ছেড়ে কোথাও যাবে না। মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষকে ফেলে বেহেস্তে গেলেও শান্তি পাবে না।’ ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে নির্ভিকতা-দৃঢ়চেতা মনোভাব বহিঃপ্রকাশে জনগণকে প্রতিনিয়ত সতর্ক করছেন। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির আকাশচুম্বী অর্জন অকেনেরই গাত্রদাহের কারণ হয়েছে। অহেতুক-অনর্থক ন্যূনতম কোন সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও অনাকাঙ্ক্ষিত-অনভিপ্রেত পন্থায় জনগণকে বিভ্রান্ত করার লক্ষ্যে মিথ্যাচার-প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করা হচ্ছে। বৈশ্বিক সামগ্রিক মন্দার এবং সর্বক্ষেত্রে অস্থিরতার বিষয়গুলো তুলনামূলক বিশ্লেষণ ছাড়াই একপেশে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের জনগণ সুদূর অতীত-অতীত-নিকট অতীতের নির্বাচন অভিজ্ঞতায় পরিপুষ্ট। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন ও দেশ পরিচালনায় সরকার গঠনে জনগণের রায়ই মুখ্য। অরাজক পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে কথিত বিদেশিদের অভিশপ্ত পদচারণায় দেশের অপামর জনগণ প্রকৃত অর্থেই বীতশ্রদ্ধ।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়