জিতলেই প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত নেদারল্যান্ডসের। এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আসরের দ্রুততম গোলটি করলেন কোডি হাকপো কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল ইকুয়েডর। নেদাল্যান্ডসকে রুখে দিয়ে জমিয়ে দিল শেষ ষোলোয় যাওয়ার লড়াই।
আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শুক্রবার ‘এ’ গ্রুপের এ ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। এতে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে স্বাগতিক কাতারের।
শেষ ষোলোয় এক পা দিয়ে বিরতিতে গিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। ইকুয়েডরের এনের ভালেন্সিয়ার গোলে অপেক্ষা বাড়ল লুই ফন খালের দলের।
আক্রমণাত্মক শুরুর পর ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। ডেভি ক্লাসেনের কাছ থেকে বল পেয়ে, একটু এগিয়ে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন হাকপো। চলতি আসরে এটি তার দ্বিতীয় গোল।
এই গোলের পর খেলার গতি কমিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডস। নিজেদের মধ্যে ছোট ছোট পাসে ‘সময় নষ্ট’ করতে থাকে। তবে এত লম্বা সময় স্রেফ বল ধরে রেখে কাটিয়ে দেওয়া তো সম্ভব নয়। তাই একটু একটু করে ফের আক্রমণে মনোযোগ দেয় তারা।
অন্যদিকে, ইকুয়েডর বল পেলেই দ্রুত গতিতে আক্রমণে উঠতে থাকে। প্রতিপক্ষ শিবিরে ছড়াতে থাকে ভীতি। ৩২তম মিনিটে সমতাও প্রায় ফিরিয়ে ফেলেছিল তারা। এনের ভালেন্সিয়ার শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন ডাচ গোলরক্ষক আন্ড্রিস নোপার্ট।
কাতার বিশ্বকাপ – আজকের খেলা-ফলাফল
লাতিন আমেরিকার দলটি চাপ ধরে রাখে প্রথমার্ধের বাকি সময়েও। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে কর্নার থেকে জালে বল পাঠায়ও তারা। কিন্তু পেরভিস এস্তুপিনান শট নেওয়ার সময় গোলরক্ষকের ঠিক সামনে ইকুয়েডরের একজন দাঁড়িয়ে থাকায় মেলেনি গোল।
গোলের জন্য অবশ্য এরপর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৪৯তম মিনিটে ভালেন্সিয়া সমতায় ফেরান দলকে। এস্তুপিনানের শট ঠিক মতো ফেরাতে পারেননি ডাচ গোলরক্ষক। আলগা বল পেয়ে বাকিটা অনায়াসে সারেন কাছেই থাকা ভালেন্সিয়া।
এর সঙ্গে গড়েন দারুণ এক কীর্তি। বিশ্বকাপে দলের টানা ছয়টি গোল করেন তিনি। বসেন পর্তুগিজ কিংবদন্তি ইউজেবিও, ইতালির পাওলো রস্সি ও রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কোর পাশে।
৫৯তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত ইকুয়েডর। ভালেন্সিয়ার শট ভার্জিল ফন ডাইক ফিরিয়ে দেওয়ার পর গনসালো প্লাতার বুলেট গতির শট ব্যর্থ হয় ক্রসবারে লেগে!
ম্যাচের শেষ দিকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন ৩ গোল করে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ভালেন্সিয়া। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে একটু এদিক-সেদিক হলে গোল পেয়ে যেতে পারত একুয়েডর। গোলরক্ষক নোপার্ট শট নিতে একটু দেরি করেন, ডি-বক্সে ছুটে আসা কেভিন রদ্রিগেসের পায়ে লেগে একটুর জন্য জালে যায়নি বল।
ম্যাচ শুরুর ৫ মিনিট ৪ সেকেন্ডে গোল করার পর বাকি সময়ে গোলের জন্য কেবল একটি শট নিতে পারে নেদারল্যান্ডস! এর বিপরীতে গোলের জন্য ১৪টি শট নেয় ইকুয়েডর, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে।
৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে নেদারল্যান্ডস। সমান পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে ইকুয়েডর। নিজেদের পরের ম্যাচে হার এড়াতে পারলে শেষ ষোলোয় যাবে এই দুই দলই।
৩ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে সেনেগাল। টানা দুই হারে কাতারের পয়েন্ট শূন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার পর প্রথম স্বাগতিক হিসেবে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিল তারা।