এক জালে ১৪ টন মাছ!

নৌকায় বোঝাই করতে না পেরে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটক ও স্থানীয়দের মাঝে বিলি

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৮ নভেম্বর, ২০২২ at ৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ মাছে সয়লাব কক্সবাজার শহরের পর্যটক অধ্যুষিত লাবণী পয়েন্ট সৈকত। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মহেশখালীর একটি টানা জালের বোটে প্রায় ১৪ মেট্রিক টন মাছ ধরা পড়ে। সেখানে আছে পোয়া, ফাইস্যা, চামিলা ও ছোট ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ। কিন্তু এত মাছ ধারণের ক্ষমতা সেই নৌকায় না থাকায় অতিরিক্ত মাছ স্থানীয়দের কাছে তুলে দেন জেলেরা। শত শত স্থানীয় লোক ও পর্যটক জাল থেকে খুলে সেই মাছ সংগ্রহ করেন।
স্থানীয় বিচ কর্মী বেলাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে মহেশখালীর ৯ জেলেসহ একটি টানা জালের বোট কক্সবাজার উপকূলে জাল ফেলে। সকাল ৮টার দিকে ওই জালে বিপুল পরিমাণ
মাছ ধরা পড়লে জেলেরা সেই জাল তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। এরপর তারা জাল থেকে মাছগুলো খুলে নৌকা বোঝাই করার এক পর্যায়ে সেই নৌকাটি পূর্ণ হয়ে গেলে বাকি মাছগুলো স্থানীয়দের দিয়ে দেয়। এরপর শত শত স্থানীয় লোক ও পর্যটক যে যেভাবে পারে জাল থেকে খুলে ইচ্ছেমত মাছ নিয়ে যান। অনেকেই বিনামূল্যে সেই মাছ সংগ্রহ করার পর তারা আবার খুচরা ও পাইকারি দরে অন্যত্র বিক্রি করে দেন।
তিনি জানান, ধরা পড়া মাছের মধ্যে মাত্র এক চতুর্থাংশ নিয়ে যায় জেলেরা। বাকি মাছগুলো নৌকা বোঝাই করতে না পেরে তারা স্থানীয়দের হাতে তুলে দেয়। এই মাছের মধ্যে প্রায় ৫ টনের মতো মাছ স্থানীয় ও পর্যটকরা নিয়ে যান। আর সমপরিমাণ মাছ নাজিরারটেক শুটকি মহালের ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান।
এদিকে এসব মাছ দেখতে সৈকতে ভিড় করে শত শত মানুষ। তাদের সামলাতে হিমশিম খায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় বিচ কর্মীরা। ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শামীম হোসেন বলেন, জেলেরা সাগরে অতিরিক্ত মাছ পেয়ে জালসহ ফেলে দেয়। আর এ মাছ কুড়িয়ে নিতে স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকেরাও ভিড় করেন।
খবর পেয়ে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) কুইক রেসপন্স টিমের বিজ্ঞানীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রেসপন্স টিমের সদস্য তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ধরা পড়া মাছের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল পোপা ও চামিলা। আর এসব মাছ অগভীর সমুদ্র উপকূলে ঝাঁকে ঝাঁকে চলাফেরা করে, যাকে স্কুল অব ফিশ বলা হয়। একটি ‘স্কুলে’ কয়েক লাখ পর্যন্ত মাছ থাকতে পারে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, একেকটি টানা জালে বা বেহুন্দি জালে মাছের একেকটি স্কুল ধরা পড়তে পারে। বেশ কয়েক বছর আগে টেকনাফের শামলাপুরে জেলেদের একজালে প্রায় কোটি টাকার পোপা মাছ ধরা পড়ে। স্থানীয়রা জানান, টানে জালে ছোট থেকে বড় সকল ধরনের মাছ ধরা পড়ে। এসব জাল থেকে পোনা ছাড়া কোনো মাছের বের হওয়ার সুযোগ নেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনোটিশ ছাড়া কারখানা বন্ধ, শ্রমিকদের বিক্ষোভে সড়ক বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ‘প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়’ স্কুল ছাত্রীকে ছুরিকাঘাত