এক একটা বিশ্ব্কাপ মানে এক এক রকমের ফুটবল। যে ফুটবল নিয়ে বিশ্ব সেরা তারকারা বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াই করতে সে বিশ্বকাপের বলটাও হওয়া চাই তেমনই। তাই প্রতিটা বিশ্বকাপে কিভাবে বলের মান উন্নয়ন করা যায় সে চেষ্টাই করে থাকে বিশ্বের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। আর বিশ্বকাপের ফুটবল তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্টান অ্যাডিডাসের সঙ্গে ফিফার সম্পর্কটা বেশ পুরোনো। সেই ১৯৭০ সাল থেকে বিশ্বকাপের প্রতি আসরের জন্য বল প্রস্তুত করে আসছে বিখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি। এবারের আসরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত মার্চে কাতার বিশ্বকাপের জন্য তৈরি বলটি উন্মোচন করে ফিফা। যার নাম ‘আল রিহলা’। আরবি ভাষার এই শব্দটির অর্থ ভ্রমণ। কাতারের পতাকা, ঐতিহ্যবাহী নৌকা, স্থাপত্য ও সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তৈরি করা হয়েছে বলটি। যেখানে ২০টি প্যানেলের ডিজাইন ব্যবহার করেছে অ্যাডিডাস। প্যানেলগুলো ত্রিভুজাকৃতির। যা মধ্যপ্রাচ্যের ‘ধো’ নৌকাকে মনে করিয়ে দেয়। প্যানেলের দুই দিক বিভিন্ন রঙে আবৃত। যা কাতারের পতাকা ও আরবের ঐতিহ্যবাহী সাদা পোশাককে ফুটিয়ে তুলেছে।
প্রযুক্তির ছোঁয়া প্রতিনিয়তই ফুটবলকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় বলের ভেতর ও বাইরে নতুন প্রযুক্তি স্থাপন করেছে অ্যাডিডাস। বলটিতে থাকছে ‘সিআরটি কোর’ এবং স্পিডশেল। যা ভিএআরকে আরো আধুনিক করে তুলবে। যাতে করে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে নির্ভুল ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন রেফারিরা। অন্যান্য আসরের বলগুলোর তুলনায় ‘আল রিহলা’ বাতাসে সবচেয়ে বেশি গতিতে ভাসবে । পরীক্ষানিরীক্ষার সময়ে বেশ কয়েকজন গোলকিপার বলটি ধরতে গিয়ে আঠালো আবরণের অনুভূতি পেয়েছেন। তবে বাকি সবকিছু নিয়ে সন্তুষ্ট তারা। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে ‘জাবুলানি’ বল নিয়ে অনেক গোলকিপারই সমালোচনা করেছিলেন। তৎকালীন ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার হুলিও সিজারের মতে, এই বল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। নিউইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অ্যাথলেটিক’ অবশ্য বলছে, ‘আল রিহলা’র বাতাসে অপ্রত্যাশিত কিছু করার সম্ভাবনা থাকলেও তা জাবুলানির মতো এতটা সমস্যায় ফেলবে না। তাই এবারের বিশ্বকাপের বলটি সবচাইতে আধুনিক এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে সেরা।