প্রত্যাশার চাপে যেন হারিয়ে না যাই

নিখিল রঞ্জন দাশের কলাম | বৃহস্পতিবার , ২৭ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

এবারের টি-২০ বিশ্বকাপে সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিরূপ সমালোচনাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। আজ সকাল ৯টায় বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। শক্তিমত্তার বিচারে দক্ষিণ আফ্রিকা নিঃসন্দেহে শক্তিশালী। তবে ক্রিকেটবোদ্ধারা বলছেন বাংলাদেশ অত্যন্ত বিপজ্জনক, যাকে নিয়ে এ মুহূর্তে কোন আগাম মতামত দেওয়া উচিৎ নয়-ইংরেজি পরিভাষায় তাঁরা বলছেন, dangerously unpredictable.
সে যাই হোক না কেন, প্রথম ম্যাচে জয়লাভের ফলে বাংলাদেশের মনোবল এখন তুঙ্গে-এটা আমরা ধরে নিতে পারি। দক্ষিণ আফ্রিকা ইতিমধ্যে একটি পয়েন্ট হারিয়েছে। বৃষ্টি বিঘ্নিত সেই ম্যাচে তারা জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে বাধ্য হয়- যদিও সেটা ছিল অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তাই আজকের এই ম্যাচে তারা মরিয়া হয়ে ঝাঁপাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আবহাওয়া নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার একটা খেদ অনেক দিনের-সেটা ক্রিকেটমোদীরা অবশ্যই জানেন-বৃষ্টি বার বার তাদের পথের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি কিন্তু শক্তিশালী এবং শিরোপার অন্যতম প্রত্যাশী। কুইন্টন ডি কক, টেম্বা বাভূমা, ডেভিড মিলার, মার্করাম, হেনরিন ক্লঅসেন, রাইলি রুশো যে কোন বোলিং এর ত্রাস। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং অত্যন্ত উঁচুমানের। পেস বোলিংয়ে রাবাদা, আরনেল, নর্কিয়া, লুঙ্গি এনগিডি যে কোন ব্যাটিং লাইন আপকে ছাড়খাড় করে দিতে পারে।
স্পিন আক্রমণে কেশব মহারাজ, তাবরেজ শামসি আজ বিশ্বনন্দিত। দলে দু’জন স্বীকৃত অল-রাউন্ডার রয়েছেন। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস ও রেজা হেনড্রিকস। কাজেই সব দিকে বিবেচনা করলে দক্ষিণ আফ্রিকা অত্যন্ত ব্যালান্সড একটা দল।
টি-২০ ক্রিকেটকে অনেকে বেসবলের ক্রিকেটীয় সংস্করণ হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। ক্রিকেটীয় আবেগের বাইরে এটাকে অনেকটা বিনোদন বা সাময়িক আনন্দের খোরাক হিসাবে চোখে দেখা হয়। তবে এই যুগে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টি-২০ ক্রিকেট জায়গা করে নিয়েছে এটা স্বীকার করতেই হবে। এখানে দায়সারা কোন কাজের সুযোগ খুবই সীমিত। নির্দয় পেশাদারিত্ব এবং দক্ষতা-টি-২০ ক্রিকেটের অন্যতম রসদ। নেদারল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ এর জয়লাভ কাকতালীয় নয়। কেননা সে ‘ইনটেক্ট’ আর ‘ইমপ্যাক্ট’ এর বুলি আমরা শুনে এসেছি তার প্রমাণ আমরা কিছুটা পেয়েছি।
সাধারণত: একটা জয়ী দলে কোন পরিবর্তন কাম্য নয়। তবে কেন জানি না আগের ম্যাচে একজন বোলার কম খেলানো হয়েছে বলে আমার ধারনা। তাছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা দলে বাঁ-হাতি ব্যাটারের আধিক্যের কারণে মোসাদ্দেক এর পরিবর্তে আমার মনে হয় মেহেদী হাসান মিরাজ অনেক কার্যকর হবে। তাসকিন, মোস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ, সাকিব, মিরাজ সমৃদ্ধ বোলিং লাইন আপ দক্ষিণ আফ্রিকার বিধ্বংসী ব্যাটিংকে দমিয়ে রাখতে পারবে বলে আমার ধারনা।
আমরা সবসময় বাংলাদেশ ভাল খেলুক তাই চাইব- তাই প্রত্যাশার চাপ না বাড়িয়ে দলের কাছে প্রাপ্তি কামনা করা ছাড়া আমাদের আর কিই-বা করার আছে। তাই বলতে হয়- ‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে, হবে হবেই দেখা-দেখা হবে বিজয়ে। চলো বাংলাদেশ’।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইংল্যান্ডকে হারিয়ে বড় চমক আয়ারল্যান্ডের
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী, গণসংযোগে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলেন তারা