তিনমাসে ২শ একর সরকারি জায়গা উদ্ধার, অর্ধশত দালাল চিহ্নিত

সীতাকুণ্ড ভূমি অফিস

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৭:৩৮ পূর্বাহ্ণ

যেকোনো ভূমি অফিস ছিল সেবাপ্রার্থীদের কাছে আতঙ্কের। হয়রানি ও ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল বিস্তর। কিন্তু বর্তমানে সেখানে ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে সেবা পাচ্ছে ভূমি মালিকরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে ভালো আচরণও। ভূমি সেবা হচ্ছে ডিজিটাল, বদলে গেছে দিনকাল- এ শ্লোগানকে সামনে রেখে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে জনবান্ধব হয়ে উঠেছে ভূমি অফিস।
জানা যায়, এসিল্যান্ড আশরাফুল আলম চিহ্নিত করেছেন অর্ধশত ভূমি দালালকে। এর মধ্যে গত ৬ মাসে জরিমানা করেছেন ২১ দালালকে। এছাড়া ১৫ জন দালাল থেকে মুচলেকা নিয়েছেন। এসিল্যান্ডকে ঘুষ গ্রহণের প্রস্তাব, সাধারণ গ্রাহক থেকে নামজারির কথা বলে টাকা নেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে দালাল চক্রকে। গত তিন মাসে তিনশ কোটি টাকার মূল্যের ২শ একর সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে। তম্মধ্যে গুলিয়াখালী সি-বিচ এলাকায় ২ একর, কদমরসুলে ৫ একর, বালৈয়ারঢালায় ১০০ একর, জঙ্গল ভাটিয়ারীতে ৮০ একর, মহাদেবপুরে ১২ একর ও মান্দারীটোলা এলাকায় এক একর। ওই সকল সরকারি জমিতে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া গত এক বছরে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। যা পুরো চট্টগ্রামের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে এ ভূমি অফিস।
চলতি এক বছরে এসিল্যান্ড অফিসে ৮ হাজার ৬৩টি নামজারি মামলা রেকর্ড হলেও সম্পন্ন হয়েছে ৭ হাজার ৯২০টি। চলমান আছে ১৪৩টি। প্রতি মাসের শেষ বুধবারে ভূমি অফিসে উঠে আসে নানান তথ্য। গণ শুনানিকালে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নেন এসিল্যান্ড।
ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, ইতিমধ্যে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে। মিউটেশনে (ই-নামজারি) শতভাগ সফলতা অর্জন করা, উন্নয়ন কর আদায় ও ভিপি সম্পত্তির লিজ মানি আদায়ে শতভাগ সাফল্য, পাহাড়ে অবৈধ দখলকারীদের উচ্ছেদ, জনসম্মুখে শুনানির মাধ্যমে জমির বিরোধ নিষ্পত্তি ছাড়াও ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদান করে জনসাধারণের আস্থা অর্জন করছে সীতাকুণ্ড ভূমি অফিস।
সেবা প্রার্থী রোজিনা আক্তার বলেন, ২০০৭ সালে হেবামূলে ৩২ শতক জায়গার মালিক হন। কিন্তু দীর্ঘদিন ভূমি অফিসের যাওয়া আসা করলেও নামজারি করা সম্ভব হয়নি। অনেক দালাল ধরেও কোনো কাজ হয়নি। গত বুধবার গণ শুনানিকালে বিষয়টি এসিল্যান্ডকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক কাগজপত্র দেখে নামজারি করার নির্দেশ দেন। সোমবার নামজারি খতিয়ান হাতে পেয়ে স্বস্তি পেলাম। একই কথা বলেছেন উপজেলার মহালঙ্কা এলাকর কামাল উদ্দিন ও ভাটেরখীল এলাকার মোহাম্মদ সেলিম।
জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, একসময় সবচেয়ে অবহেলিত সেক্টর ছিল ভূমি। তহসিল কিংবা এসিল্যান্ড অফিস সম্পর্কে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক মনোভাব ছিল। আমরা সেটা কাটিয়ে উঠেছি। এখন ভূমি অফিস থেকে সেবা পাচ্ছে না এ কথা কেউ বলতে পারবে না। ভূমি অফিসগুলো সেবাবান্ধব হয়ে উঠেছে। অফিসে সিসি ক্যামেরা, হেল্প ডেস্ক কিংবা সেবাকুঞ্জ স্থাপন যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেসবুকে হঠাৎ ফলোয়ার কমে গেল কেন
পরবর্তী নিবন্ধএক ঘণ্টার ইউএনও হলেন শিশু রাংচাকতি