চলতি মাসের শেষভাগে বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় সরকার ‘সতর্ক’ আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
সচিবালয়ে গতকাল বুধবার ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি। খবর বিডিনিউজের।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা জিএফএস ঘূর্ণিঝড়ের বার্তাটি দিয়েছে। আমরা বার্তাটি পেয়েছি। তারা বলেছে, ১৭ অক্টোবর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হবে। যেটা পরবর্তী সময়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঝড়ের রূপ নেবে। ওই ঝড় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও আমাদের সুন্দরবনের কিছু অংশে আঘাত হানতে পারে। এটি আম্পানের মত সুপার সাইক্লোনেও রূপান্তরিত হতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, জিএফএস ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিলেও দেশের আবহাওয়াবিদরা এখনও তেমন কোনো বার্তা দেননি। তারা (আবহাওয়াবিদ) বলেছেন, এটি আরও পর্যবেক্ষেণ করতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ও লঘুচাপ এখনও সৃষ্টি হয়নি। সরকার বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে আলোচনা করেছেন। তিনিও এটা নজরদারিতে রাখতে বলেছেন। আমাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা সতর্ক আছি। আমাদের আবহাওয়া দপ্তর জাপান ও ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে।
সত্যি সত্যি কোনো ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে এবার তার নাম হবে ‘সিত্রাং’। এই নাম থাইল্যান্ডের দেওয়া। সরকার আগাম প্রস্তুতি কী নিচ্ছে জানলে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, সিদ্ধান্ত এলে আগাম প্রস্তুতির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। কিন্তু আজকের দিন পর্যন্ত কোনো নিম্নচাপ বা লঘুচাপের তথ্য আমরা পাইনি। তবে মাঠ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে এ বার্তাটি পৌঁছে গেছে, তারা প্রস্তুত আছে।
গুরুত্ব পেয়েছে বজ্রপাত : এদিন সংবাদ সম্মেলনে বজ্রপাতে মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বজ্রপাতের ঝুঁকি কমাতে ও পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য ‘হাওরঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (জুলাই, ২০২১-জুন, ২০২৪)’ এবং ‘বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে দেশব্যাপী বজ্রনিরোধক কাঠামো স্থাপন প্রকল্প (জুলাই, ২০২১-জুন, ২০২৪)’ গ্রহণ করা হয়েছে। ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্পে তিনটি ধাপ থাকছে। প্রথম ধাপে জনগণকে বজ্রপাতের বিষয়ে সচেতন করার জন্য প্রচার চালানো হবে। আগাম সতর্কবার্তা চালু করা হল দ্বিতীয় ধাপ। ইতোমধ্যে কয়েকটি জায়গায় ‘ওয়ার্নিং সিস্টেম’ বসানো হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। সতর্কবার্তা পাওয়ার পর মানুষের প্রয়োজন হবে নিরাপদ আশ্রয়। সেজন্য দেশব্যাপী বজ্র নিরোধক কাঠামো তৈরি করা হবে তৃতীয় ধাপে। এসব কাজে বিশেষজ্ঞের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা ৪০ মিনিট আগে বজ্রপাতের সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিতে পারেন। বাংলাদেশে ৪০ মিনিট আগে সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভব হলে মানুষ কাছাকাছি কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারবে। এ প্রকল্পের আওতায় দেশে ৬ হাজার ৫০০টি বজ্রপাত নিরোধক আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা আছে বলে জানান এনামুর রহমান।












