সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত রাঙামাটির রাজবন বিহার

রাঙামাটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা পালন

রাঙামাটি প্রতিনিধি | রবিবার , ৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৪:৫০ অপরাহ্ণ

দেশের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সারাদেশের মতো রাঙামাটিতেও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করা হচ্ছে।

আজ রবিবার (৯ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটি রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে বৌদ্ধ পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষু সংঘের পিণ্ডদান ও প্রাতঃরাশ, বুদ্ধমূর্তি দান, পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিষ্কার দান, বুদ্ধপূজাসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান শেষে সকল প্রাণীর হিতার্থে ধর্মদেশনা দেওয়া হয়।

স্বধর্মপ্রাণ দায়ক-দায়িকাদের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা দেন রাজবন বিহারের ভিক্ষু-সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাথের। বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত ধর্মপ্রাণ নর-নারীর সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো বিহার প্রাঙ্গণ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, রাজবন বিহার পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় কান্তি খীসা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রজ্ঞালংকর মহাথেরো বলেন, “প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্য দিয়ে বুদ্ধের অহিংসা পরম নীতি মেনে চলে সকল প্রকার মিথ্যা দৃষ্টি পরিহার করে লোভ, হিংসা, মোহ সংঘাতসহ যাবতীয় খারাপ কাজ পরিহার করে সৎ পথে চলতে ও মৈত্রীপূর্ণ মনোভাব নিয়ে একে অপরের সাথে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে হবে।”

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা বলেন, “সারা বিশ্বে মহামারী চলছে। তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশ এবং সারা বিশ্বে যেন শান্তি বিরাজ করে আমরা এটা কামনা করি। অস্ত্র নয়, যুদ্ধ নয় শান্তিতে আমরা বিশ্বাস করি। জগতের সকল মানুষ যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে এটাই আমার কামনা।”

পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অং সুই প্রু চৌধুরী বলেন, “আজকের দিনের প্রত্যাশা হলো সমগ্র বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সবার মাঝে সম্প্রীতি সৃষ্টির। তিন পার্বত্য জেলাসহ সারা বাংলাদেশ যেন সম্প্রীতির দেশ হিসেবে রুপান্তরিত হয় এটাই আমরা চাই।”

উল্লেখ্য, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাসের শেষ দিনটিতে প্রবারণা পূর্ণিমা হিসেবে উদযাপন করে থাকে। প্রবারণা হলো আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের অনুষ্ঠান। এর পর থেকে দীর্ঘ এক মাস ধরে আয়োজন চলবে কঠিন চীবর দানোৎসব (ভিক্ষুদের গেরুয়া রংয়ের বস্ত্র) প্রদান অনুষ্ঠান।

সন্ধ্যায় আকাশে ফানুস উত্তোলন ও প্রজ্জ্বলন করা হবে হাজার প্রদীপ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে সেপটিক ট্যাংকে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দ্বিতীয় হার বাংলাদেশের