মোহামেডান ব্লুজ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। দুদলের কেউই চ্যাম্পিয়ন কিংবা রানার্স আপ লড়াইয়ে নেই। এমনকি রেলিগেশন শংকায়ও নেই। অনেকটাই নিরাপদ অবস্থানে দু দলই। তাই দুই দলের মধ্যকার প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ম্যাচটি তেমন উত্তেজনা ছড়ানোর কথা নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল এই ম্যাচটিই এবারের লিগের সবচাইতে উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে পরিণত হলো। লাল কার্ড, পেনাল্টি, বাক বিতন্ডা, মোহামেডান কর্মকর্তাদের মাঠে ঢুকে প্রতিবাদ সবকিছু মিলিয়ে এই ম্যাচটিই পরিণত হলো ঘটনা বহুল এক ম্যাচে। আর নিস্প্রান একটি ম্যাচকে উত্তেজনাপূর্ণ মাচে পরিণত করলেন খেলার রেফারী বিশ্বজিত । ঘটনাবহুল এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জিতেছে মোহামেডান ব্লুজ। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মোহামেডান ব্লুজ ২-১ গোলে হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। ম্যাচের প্রথমার্ধেই হয়েছে গোল তিনটি।
ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা আভাস। যদিও খেলার মাত্র ৫ম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু ডানপ্রান্ত থেকে পাওয়া বলে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধার এক স্ট্রাইকার। মোহামেডান ব্লুজ গোল রক্ষক দারুণ দক্ষতায় সে যাত্রায় দলকে রক্ষা করে। তবে গোল আদায় করে নিতে বেশি সময় নেয়নি মোহামেডান ব্লুজ। খেলার ১০ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহামেডান ব্লুজ। মুক্তিযোদ্ধা ডি বক্সের বাইরে থেকে তাদের এক ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে যান মোহামেডান ব্লুজের মতিউর। আগোয়ান গোল রক্ষককে ফাঁকি দিয়ে তিনি বল পাঠিয়ে দেন জালে। এগিয়ে যায় মোহামেডান ব্লুজ। এরপর সময় যতই গড়িয়েছে ততই খেলোয়াড়দের সাথে রেফারির বাক বিতন্ডা হয়েছে। ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে মোহামেডান ব্লুজ। এবার ডানপ্রান্ত থেকে সুমনের কর্নার কিক। উড়ে আসা বলে নিখুঁত এক হেডে বল জালে পাঠান মতিউর। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহামেডান ব্লুজ।এরপর গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে মুক্তিযোদ্ধা। অবশেষে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান কমায় মক্তিযোদ্ধা। নিজেদের ডিবক্সে মুক্তিযোদ্ধার সুমনকে ফাউল করেন মোহামেডান ব্লুজের এক ডিফেন্ডার। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। আর সে পেনাল্টি থেকে মুন্না গোল করে ব্যবধান ২-১ করেন। এই গোলের পরপই মোহামেডান ব্লুজ মাঠ থেকে তুলে নেয় তাদের খেলোয়াড় জিতুকে। তার পরিবর্তে আরেকজনকে নামানো হয়েছিল। কিন্তু জিতু বেশ ধীর গতিতে মাঠ ছাড়ছিলেন। রেফারি বারবার তাগাদা দিলে জিতু কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন রেফারীকে। আর তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে রেফারি জিতুকে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। ততক্ষণে অবশ্য জিতু সাইড লাইন অতিক্রম করে ফেলেছে। এই লাল কার্ড দেখানোর সাথে সাথেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মোহামেডান ব্লুজের খেলোয়াড় এবং ডাকআউটে থাকা কর্মকর্তারা। তারা মাঠে ঢুকে রেফারীকে আক্রমণের চেষ্টা করে। তবে খেলা পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে শান্ত হয় মোহামেডান ব্লুজের কর্মকর্তারা।
লাল কার্ড পাওয়ার আগে জিতু মাঠের বাইরে চলে আসায় ১১ জনই খেলবে মোহামেডান ব্লুজের। রেফারীর এমন সিদ্ধান্তে এবার তাকে ঘিরে ধরে মুক্তিযোদ্ধার খেলায়াড়রা। এবার বাক বিতন্ডা চলে আরো কিছুক্ষন। শেষ পর্যন্ত সব থামিয়ে আবার মাঠে গড়ায় খেলা। প্রথমার্ধে এগিয়ে থাকা মোহামেডান ব্লুজ যেমন গোল বাড়ানোর চেষ্টা করেছে তেমনি পিছিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধা সমতা ফেরানো চেষ্টা করেছে দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু কোন দলই আর গোল করতে পারেনি। ফলে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মোহামেডান ব্লুজ। লিগে এটি তাদের তৃতীয় জয়। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন মোহামেডান ব্লুজের সুমন। তার হাতে পুরষ্কার তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর অনুপ বিশ্বাস। আজ একটি মাত্র খেলা অনুষ্ঠিত হবে। গুরুত্বপূর্ন সে খেলায় মুখোমুখি হবে শতদল ক্লাব এবং সিটি কর্পোরেশন একাদশ।












