চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, “আজ দেশের কোনো মানুষ ভালো নেই। এই সরকারের খুন, গুম, নির্যাতন, নিপীড়নে পুত্র হারিয়েছে তার পিতাকে, পিতা হারিয়েছে তার পুত্রকে, স্ত্রী হারিয়েছে তার প্রিয়তম স্বামীকে। দেশে মানবাধিকার বলতে কিছুই নেই।”
আজ সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন হলে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ছাত্র যুব ফ্রন্ট চট্রগ্রম মহানগর শাখার উদ্যোগে শারদীয় দূর্গ্ াপূজা উপলক্ষে সনাতনী ভাই-বোনদের শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বস্ত্র বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথের জায়গা দখলকারী রানা প্লাজার মালিক রানার এখনো কোনো বিচার হয়নি। দেশের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবক্ষয় হচ্ছে। সম্প্রতি আমরা কি দেখেছি? ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের ঘটনায় আজ দেশবাসী লজ্জিত। সাধারণ ছাত্রীদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ভয় দেখিয়ে ছাত্রলীগের নেত্রীরা তাদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড করতে বাধ্য করতেন। কিন্তু প্রশাসন ও সরকার জেনেও কোনো ব্যবস্থা
গ্রহণ করেনি। এই সরকার বাংলাদেশকে চরম অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল সনাতনী ভাই-বোনদেরকে বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, “হিন্দু-বৌদ্ধ, রাখাইন, মারমা আমাদের সকলের একটাই পরিচয় আমরা সকলেই বাংলাদেশী। এই দেশে একজন মুসলমানের যেমন অধিকার আছে ঠিক তেমনি হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকলেরই সমান অধিকার আছে। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সকলের। এই বাংলাদেশ আমার, আপনার, আমাদের সকলের।”
তিনি আরো বলেন, “জনগণের ভোটকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। দীর্ঘ এক যুগের অধিক মানুষ তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। ভোট কি জিনিস তা ভুলে গেছে জনগণ। তাই এই দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে হবে। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সকল ধর্মের মানুষের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়তে হবে। তাই এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। আন্দোলনের মাধ্যমে অবৈধ এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে।”
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, “আমরা কোন দেশে বসবাস করছি? পৃথিবী দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে অথচ আমরা দিন দিন পিছনের দিকে যাচ্ছি। গণতন্ত্র আজ শেখ হাসিনার শিকলে বন্দী। আপনি, আমি, আমরা কেউ ভোট দিতে পেরেছি? গণতন্ত্র নেই। আপনি যদি প্রতিবাদ করেন তাহলে আপনাকে মামলা খেতে হবে, জেলে যেতে হবে, নির্যাতন-নিপীড়নের স্বীকার হতে হবে। আপনি যদি আওয়ামী লীগ করেন তাহলে সাত খুন মাফ। নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে দেশ শাসন করছে এই স্বৈরাচার সরকার। একটি চিরন্তন সত্য হচ্ছে হিন্দুরা যদি বাংলাদেশে থাকে তাহলে নির্বাচন আসলে আওয়ামী লীগের লাভ। আর যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় তাতেও আওয়ামী লীগের লাভ। তারা তাদের সম্পত্তি দখল করতে পারবে।”
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ছাত্র যুব ফ্রন্ট চট্রগ্রম মহানগর শাখার সভাপতি জে বি এস আনন্দ বোধি ভিক্ষুর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক অপু চৌধুরী আকাশের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইস্কান্দার মির্জা, আব্দুল মান্নান, সদস্য কামরুল ইসলাম।
আরো উপস্থিত ছিলেন ইসকন প্রবর্তক মন্দিরের সন্ন্যসী হরি লীলাময় দাস, পলাশ চৌধুরী, কামাল উদ্দিন পারভেজ, আবদুল জলিল, জেলা ফ্রন্ট সভাপতি সঞ্জয় চক্রবর্তী, জেলা ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন কুমার নাথ, এন মোহাম্মদ রিমন, আবদুল্লাহ আল সোনা মানিক, সৌরভ প্রিয় পাল, মিঠুন বৈষ্ণব, দীপক চৌধুরী কালু, রতন চন্দ্র মালী, বাবুল মল্লিক, রানা দাশ, রিপন শীল, জনি চাকমা, সুব্রত আইচ, কিং মোতালেব প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।