ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্য সচিবালয় ‘নবান্ন’ অভিমুখে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল ভারতীয় জনতা পার্টির বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানী কলকাতা। কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার জানায়, বিজেপি’র নবান্ন অভিযান ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। নগরী ঘিরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। কিন্তু তাতেও পিছপা হননি বিজেপি কর্মীরা। বেলা যত গড়িয়েছে বিজেপি তত নানা দিক থেকে মিছিল নিয়ে নবান্নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। পুলিশও তাদের বাধা দেওয়ার সব রকম চেষ্টা করেছে। ফলে সকাল থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনার পারদও চড়তে থাকে। খবর বিডিনিউজের।
দিনের শুরুতেই বিরোধীদলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী আটক হন বলে জানায় এনডিটিভি। এছাড়াও, স্থানীয় বিজেপির আরো বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে মিছিল থেকে আটক করেছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে বিজেপি এমপি লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং রাহুল সিনহাও আছেন। এনডিটিভি জানায়, শুভেন্দু, লকেট, রাহুলসহ বিজেপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা মিছিল নিয়ে নবান্নের দিক এগুতে চাইলে পুলিশ তাদের দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজের কাছে আটকে দেয় এবং একটি পুলিশ ভ্যানে করে ওই নেতাদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। হাওড়া ব্রিজের কাছে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল এবং জলকামান ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখানে বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেখানে কয়েকজন আহত হন। রানিগঞ্জেও বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিজেপি নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে। নবান্ন অভিযানে অংশ নিতে পুরো পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপির শত শত কর্মী-সমর্থক মঙ্গলবার সকালে কলকাতা এবং কাছের হাওড়ায় পৌঁছান। বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীদের আনতে বিজেপি আস্ত ট্রেন ভাড়া করেছিল বলে জানায় আনন্দবাজার। তারা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো থেকে কর্মীদের আনতে তিনটি এবং দক্ষিণের জন্য চারটি ট্রেন ভাড়া করে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনে বিজেপি কর্মীদের ট্রেন ধরতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। স্টেশনে ব্যারিকেড দিয়ে রাখার অভিযোগও করেছেন বিজেপি কর্মীরা। যা নিয়ে কোচবিহার, তুফানগঞ্জ, মালবাজার ও শিলিগুড়ি জংশনে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধে যায়। পুলিশের বিরুদ্ধে শাসক দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি কর্মীরা।