ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের প্রধান ঘাঁটি ইজিয়ুম রুশ বাহিনীর হাতছাড়া হওয়ার পর এবার রুশ সীমান্তের ভেলেইকি বারলুক দখল করল ইউক্রেন সেনারা। সামরিক অবস্থানগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই শহর হাতছাড়া হওয়ায় আগামী দিনে ডনবাস অঞ্চলে মোতায়েন রুশ বাহিনী অস্ত্র এবং রসদের ঘাটতির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। একের পর এক এলাকা রুশ বাহিনীর হাতছাড়া হওয়ায় ক্ষেপেছে রাশিয়ার জাতীয়তাবাদীরা। ইউক্রেনের যুদ্ধে চূড়ান্ত জয় নিশ্চিত করতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ সেনা কমান্ডার ভ্যালেরি জালুঝনি নেটমাধ্যমে বারলুক দখলের দাবি করে একটি পোস্টে লিখেছেন, আমরা খারকিভ থেকে কেবল দক্ষিণ এবং পূর্বে নয় বরং উত্তর দিকেও অগ্রসর হতে শুরু করছি। আমরা জাতীয় সীমান্ত থেকে আর মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে। ইউক্রেন সেনার প্রত্যাঘাতে গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম ইউক্রেনের খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ুম শহর হারিয়েছে রাশিয়া। এর পর খারকিভের ৯০ কিলোমিটার পূর্বে রুশ সীমান্তবর্তী শহর বারলুক হাতছাড়া হওয়া ভ্লাদিমির পুতিন বাহিনীর কাছে ‘বড় ধাক্কা’ বলে মনে করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, টেলিগ্রামে পোস্ট করা ১১ মিনিট দীর্ঘ এক অডিও বার্তায় পুতিনের মিত্র চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ ইজিয়ুম হারানোর কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর পক্ষ হয়ে কাদিরভের বাহিনী যুদ্ধের একেবারে সম্মুখের সারিতে আছে। তবে অভিযান পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে না বলে স্বীকার করেছেন তিনি। বারলুক শহর দখলের পরে সেখান থেকেই পূর্ব এব উত্তর ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন রুশ ফৌজের জন্য অস্ত্র ও রসদ সরবরাহের পরিকাঠামো নিয়ন্ত্রিত হত। এই পরিস্থিতিতে মস্কোর তরফে ‘পিছু হঠার ব্যাখ্যাও’ মিলেছে গতকাল সোমবার। রুশ সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, পুতিনের নির্দেশে ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ মজবুত করতে ইউক্রেনের অন্য অঞ্চলগুলি থেকে সেনা সরিয়ে আনা হচ্ছে সেখানে।
প্রতিশোধ নিতে হামলা : ইউক্রেনীয় বাহিনীর আক্রমণে পিছু হটার পর রাশিয়া প্রতিশোধ নিতে বেসামরিক অবকাঠামোর ওপর হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। শনিবার যুদ্ধের অন্যতম প্রধান একটি ফ্রন্টলাইন থেকে পিছু হটতে হয়েছে রাশিয়াকে, ছেড়ে দিতে হয়েছে উত্তরপূর্ব খারকিভ অঞ্চলে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দুর্গ ইজিয়ুমকে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব লক্ষ্যে প্রতিশোধমূলক হামলাগুলো চালানো হয়েছে তারমধ্যে খারকিভের একটি পানি শোধনাগার ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে আর এর ফলে ব্যাপক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় খারকিভ ও দোনেৎস্কের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ সমস্যায় পড়ে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।












