একটা সময় যার ব্যাটে সেঞ্চুরি ছিল নিয়মিত ঘটনা, সেই বিরাট কোহলির ব্যাটে সেঞ্চুরি নেই তিন বছরেরও বেশি সময়। এই সময়ে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হয়েছিলেন বারবার। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছিলেন । সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এশিয়া কাপ দিয়ে যেন নতুন শুরু হলো তার। টুর্নামেন্টের শেষ ভাগে এসে করলেন দীর্ঘ খরা কাটানো সেঞ্চুরি। যা উৎসর্গ করলেন স্ত্রী আনুশকা শর্মা ও মেয়ে ভামিকাকে। দুবাইয়ে গত বৃহস্পতিবার এশিয়া কাপের ম্যাচে দীর্ঘ সেঞ্চুরি খরার ইতি টানেন কোহলি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোর পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে খেলেন ৬১ বলে অপরাজিত ১২২ রানের ইনিংস। ১২ চার ও ৬ ছক্কায় সাজান চমৎকার ইনিংসটি। প্রায় তিন বছর পর তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন আগামী নভেম্বরে ৩৪ বছর পূর্ণ হতে চলা কোহলি। সবশেষ ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে পেয়েছিলেন এই স্বাদ। মাঝের এই সময়ে বদলে গেছে অনেক কিছু। আগে সেঞ্চুরি করলেই খ্যাপাটে উদযাপন করতেন কোহলি। কিন্তু এদিন তেমন কিছু করলেন না তিনি। পেসার ফরিদ আহমাদকে টানা চার-ছক্কা মেরে ৯০ থেকে শতকে পা দিয়ে শুধু হেলমেট খুলে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন তিনি। ইনিংসের মাঝের বিরতিতে কথা বলার সময় কোহলি তুলে ধরেন তার এমন সাদামাটা উদযাপনের কারণ। গত আড়াই বছর আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে ৩৪ বছর পূর্ণ হবে আমার। তাই আগ্রাসী উদযাপন এখন অতীত। সেঞ্চুরির পর গলায় ঝুলা থাকা লকেটে চুমু খান কোহলি। পরে বলেন, কঠিন সময় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে কতটা ভূমিকা রেখেছিলেন তার স্ত্রী ভারতীয় অভিনেত্রী ও মডেল আনুশকা। আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি, কারণ একজন মানুষ আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক কিছু যোগ করেছিল। সেই মানুষটি আনুশকা। এই সেঞ্চুরি তাকে এবং আমাদের মেয়ে ভামিকাকেও উৎসর্গ করছি। যখন পাশে কেউ থাকে তখন কথা বলার মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক কিছু যোগ হয়। যেমনটা আনুশকা করেছে। ওয়ানডেতে ৪৩ সেঞ্চুরি করা কোহলির টেস্ট সেঞ্চুরি ২৭টি। একশ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলে ফেললেও এই সংস্করণে তার সেঞ্চুরি ছিল না একটিও। এবার সেই আক্ষেপও দূর হয়ে গেল কোহলির। এটা তার নিজের জন্যও চমক হয়ে এসেছে। আসলে আমি হতবাক হয়েছি। সেঞ্চুরি খরা কাটানোর জন্য আমার ভাবনায় সবশেষে ছিল এই সংস্করণ। অনেক কিছুর সমন্বয়ে এসেছে এই সেঞ্চুরি। দল আমাকে সহায়তা করেছে। জানি বাইরে অনেক কথা হয়েছে ফর্ম খরা নিয়ে। যখন ফিরলাম আমি মরিয়া ছিলাম না। ৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকায় সতেজ ছিলাম। বুঝেছিলাম আমি কতটা ক্লান্ত। প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, এই বিরতি আমাকে আবার খেলা উপভোগ করতে সহায়তা করেছে।