নগরীর ১৬নং চকবাজার ওয়ার্ড আ’লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ত্যাগী নেতারাই আওয়ামী লীগের সম্পদ। তারা কখনো দল ছাড়ে না। দলছুট-হাইব্রিড বর্ণচোরারা সময়ের সুযোগে আসবে আর যাবে। তাদেরকে সুযোগ দেয়া যাবে না। সুসময়ের বন্ধু-বন্ধু নয়। দুঃসময়ে যারা থাকেন তারাই প্রকৃত বন্ধু। আমাদের দুঃসময়ের কর্মী দরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চকবাজারের একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ১৬নং চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। যৌক্তিক আন্দোলন যে কোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। অযৌক্তিক ইস্যুতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা ও নাশকতা এবং জান-মালের ক্ষতি সাধন করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা হলে কাউকে ন্যূনতম ছাড় দেয়া হবে না। অতীতে বিএনপি-জামায়াত অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়েছে। সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। তারা যদি আবার একই পথ বেছে নেয় আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে পাল্টা আঘাত হানবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে ও পুনবার্সন করেছে। কুখ্যাত শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী, কুখ্যাত রাজাকার আবদুল হালিমকে মন্ত্রী বানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দায় মুক্তি দিয়ে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে বড় বড় পদে বসিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। একই পথে চলেছেন এরশাদ ও খালেদা জিয়া। এরা স্বপ্ন দেখেছিলেন এদেশ আবার পাকিস্তান হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, বাঙালি, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন। এই সত্যটি যারা অস্বীকার করে তারা পরজীবী, পরগাছা। বাংলার ঊর্বর মাটিতে এই পরগাছারাই সকল অপকর্ম, হত্যা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের মূল হোতা। এদের সমূলে উৎখাত করতে হবে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আবার যেন ২০০১ সালের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন তাঁকে বিজয়ী করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা এবং সকলের ঈমানি দায়িত্ব।
আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি ঢালাওভাবে মিথ্যাচার করে চলেছে এমনকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন হবে সাংবিধানিক উপায়ে। সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা চাইবো সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হউক। কিন্তু কাউকে জোর করে নির্বাচনে টেনে আনা সম্ভব নয়।
চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল হক রঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, জোবাইরা নার্গিস খান, শহীদুল আলম, জাফর আলম চৌধুরী, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাব উদ্দীন আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন সেলিম রহমান, ইমরান বিপ্লব, রফিকুল ইসলাম, নাফিজ ইমতিয়াজ সানজু, নিজাম উদ্দীন, এরশাদ রনি। মঞ্চে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এড. সুনীল কুমার সরকার, উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, আবদুল লতিফ টিপু, হাজী বেলাল আহমদ, মোর্শেদা আক্তার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের আনছারুল হক, রেজাউল করিম কায়সার প্রমুখ।