তিন বছর পর দিল্লি সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা আর সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই নেতার একান্ত এবং দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত ও আলোচনার বিষয়গুলো গতকাল বুধবার যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ঐতিহাসিকভাবে গভীর ও ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধন এবং গণতন্ত্র ও বহুত্ববাদের অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তি করে গড়ে ওঠা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দুই নেতা। খবর বিডিনিউজের। দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড–১৯ মহামারী এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ার প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে, এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের প্রেরণায় বৃহত্তর সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন দুই নেতা।
বৈঠকে দুই নেতাই উপ–আঞ্চলিক রেল, সড়ক ও অন্যান্য আন্তঃযোগাযোগের উদ্যোগ এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বলে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়। দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক যোগাযোগের জন্য চলমান কিছু উদ্যোগকে দুই নেতা স্বাগত জানিয়েছেন শীর্ষ বৈঠকে। এসব উদ্যোগের মধ্যে টঙ্গী–আখাউড়া ডুয়েল–গেজ রেললাইন, রেলের বগি–ইঞ্জিন সরবরাহ, রেল কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং রেলওয়ের জন্য প্রযুক্তি আদান–প্রদানের মত বিষয় রয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের বৃদ্ধিকে দুই প্রধানমন্ত্রী সাধুবাদ জানিয়েছেন জানিয়ে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের জন্য এশিয়ায় সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হয়ে উঠছে ভারত।
ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে ফ্রি ট্রানজিট দেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত। তবে এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট স্থল, বিমান ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে হবে। তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য অবকাঠামো ব্যবহার করতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। নেপাল ও ভুটানে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারত আগে থেকেই বাংলাদেশকে ফ্রি ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে আসছে। নতুন করে চালু হওয়া চিলাহাটি–হলদিবাড়ি রুটের মাধ্যমে ভুটানের সাথে রেল যোগাযোগের কথা বৈঠকে বলেছে বাংলাদেশ। কার্যকারিতা ও সম্ভাব্যতার ভিত্তিতে এই অনুরোধ বিবেচনার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে ভারত।
এদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের সেচের জন্য জরুরি প্রয়োজনের কথা তুলে ধরে ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে অন্তর্বর্তী চুক্তি দ্রুততম সময়ে স্বাক্ষরের অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। ২০১৯ সালের এমওইউ অনুসারে ত্রিপুরার সাব্রুমের জন্য ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহারে জলাধার নির্মাণের ব্যবস্থা করায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ভারত সরকার। ২০১৫ সালের কোস্টাল শিপিং এগ্রিমেন্টকে কিছুটা সমপ্রসারিত করে তৃতীয় দেশের কার্গো পরিবহনেরও সুযোগ চায় ভারত, সেই অনুরোধ তারা এবারও করেছে।












