দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশে ফিরেছেন।
দেশ ছেড়ে পালানোর দেড় মাসের বেশি সময় পর তিনি দেশে ফিরলেন।
শুক্রবার মধ্যরাতের পর গোতাবায়ার কলম্বোতে ফেরার খবর দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে তিনি কলম্বোর বন্দরনায়েকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে করে নামেন।
গোতাবায়া কলম্বোতে রাষ্ট্রীয় একটি বাংলোতে থাকবেন বলে খবর দিয়েছে শ্রীলঙ্কার সংবাদ মাধ্যম ডেইলি মিরর। এজন্য সেখানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সাবেক এ প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে একাধিক মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
গণবিক্ষোভের মুখে গত ১৩ জুলাই রাতের আঁধারে দেশ ছাড়ার পর সাবেক এই প্রেসিডেন্ট প্রথমে মালদ্বীপে যান। সেখান থেকে মেডিকেল ভিসায় যান সিঙ্গাপুর, পরে থাইল্যান্ডে। পরে সিঙ্গাপুর থেকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়েন তিনি।
এতদিন থাইল্যান্ডের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন গোতাবায়া। তার সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ইয়োমা রাজাপাকসে।
প্রথমে তাদের আগামী নভেম্বর পর্যন্ত থাইল্যান্ডে থাকার পরিকল্পনা ছিল। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তার দেশে ফেরার খবর আসে আগস্টের মাঝামাঝিতে।
এরমধ্যে গোতাবায়া যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে গত ১৮ আগস্ট খবর বের হয়। তার স্ত্রী একজন মার্কিন নাগরিক হওয়ায় সেখানে তাদের স্থায়ীভাবে থাকার চেষ্টার কথা আসে খবরে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জ্বালানি ও খাদ্য ঘাটতি নিয়ে সংকটে পড়লে দেশটিতে জনবিক্ষোভ শুরু হয়। এর আগ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে ছিল রাজাপাকসে সাম্রাজ্যেরই আধিপত্য।
এরপর গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দেশ ছাড়তে একপ্রকার বাধ্য হন গোতাবায়া। রাতের আঁধারে বিমানবাহিনীর একটি এয়ারক্রাফটে দেশ ছাড়েন তিনি।
পালিয়ে গিয়ে পদত্যাগ করার পর শ্রীলঙ্কার ছয়বারের প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে জয়ী হয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।
থাইল্যান্ডে নিরাপত্তার ঘাটতির কারণে হোটেলেই একপ্রকার বন্দি ছিলেন তিনি। সেই কারণে তিনি দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর সিঙ্গাপুর সরকার জানিয়েছিল, তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়নি, তিনি ব্যক্তিগত সফরে সেখানে গিয়েছেন।