রাউজান ৪৩৭ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ১৬০ কোটি টাকা সিকিউরিটি মানি জমা জমা না দেয়ায় এবং প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু না করায় চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এই কারণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডার জমাদানের সময় যে ২১ কোটি টাকা জামানত দিয়েছিল সেটাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রথম ঠিকাদারের সাথে চুক্তি বাতিল হওয়ায় প্রকল্পের কাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। বেড়েছে প্রকল্প ব্যয়ও। নতুন করে প্রকল্পের জন্য আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। এতে চায়না আর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। পুনঃদরপত্রে ৭টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এদের মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ে টিকেছে। এর মধ্যে চায়না একটি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে বলে জানান, রাউজান ৪৩৭ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুন্সি বশির আহমেদ।
তিনি আজাদীকে জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চায়না ‘সেপকো-থ্রি ইলেক্ট্রনিক পাওয়ার কনস্ট্রাকশনস কোম্পানি লিমিটেড’ কাজের সিকিউরিটি মানি বাবদ ১৬০ কোটি টাকা জমা না দেয়ায় এবং বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজ শুরু না করায় তাদের সাথে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। পুনঃদরপত্রে নিয়োগকৃত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নিয়োগ দেয়াসহ কার্যাদেশ দেয়ার জন্য মন্ত্রীসভা ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করছি ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রীসভা ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি থেকে একটি সুখবর পাবো। প্রকল্প ব্যয় সামান্য বেড়েছে উল্লেখ করে প্রকৌশলী মুন্সি বশির আহমেদ জানান, সমস্ত ইক্যুইপমেন্টের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প ব্যয় ৭ শতাংশ বেড়েছে। তবে এই মুহূর্তে গ্যাসের সংকট থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নে একটু সময় লাগবে। রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরনো যে দুটো ইউনিট আছে-সেই দুটি ইউনিটে এখন যে পরিমানে গ্যাস লাগে তার অর্ধেক গ্যাস দিয়ে-নতুন প্রকল্পে ৪৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে লেটেস্ট প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি দেশের জন্য উন্নত প্রযুক্তির মডেল হবে। আধুনিক প্রযুক্তির এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হলে একদিকে গ্যাস সাশ্রয় যেমন হবে অন্যদিকে উৎপাদন খরচও হবে কম।
২ হাজার ৮৭ কোটি টাকার এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটির প্রথম টেন্ডার হয়েছি ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি। গ্যাসভিত্তিক এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে ১ টাকা ৩৮ পয়সা। নতুন কেন্দ্রটি নির্মাণ হলে পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি খুলে ফেলা হবে। সেটি আর ব্যবহার করা যাবেনা।