শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় ছিলাম

মির্জা সালমান ইস্পাহানী

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৩০ আগস্ট, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

শ্রমিকদের আন্দোলন চা শিল্পের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি হলো বলে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এম এম ইস্পাহানীর চেয়ারম্যান মির্জা সালমান ইস্পাহানী। তিনি বলেছেন, মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপার নিয়ে শ্রমিকদের সাথে আমাদের এসোসিয়েশনের আলোচনা হচ্ছিল। আমরা মজুরি বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় ছিলাম। কিন্তু হুট করে এমন একটি আন্দোলন শুরু হলো- তাতে বাগানগুলোর বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা বলা হলেও আসলে তা কিন্তু নয়। শ্রমিকেরা সস্তায় চাল গম পান। তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড আছে, হাউজিং, হেলথ কেয়ারসহ বিভিন্ন খাতে তারা সুবিধা পান। যেগুলোর আর্থিকমূল্য কম নয়। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি পাতা তুললেও শ্রমিকেরা টাকা পায়। সবমিলে গড়ে ৪২৫ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেতেন তারা। তবে এটা কম বলে মন্তব্য করে সালমান ইস্পাহানী বলেন, একজন মানুষকে সারভাইব করতে হবে তো। এত কমে তো একজন মানুষ সারভাইব করতে পারে না। বিষয়টি আমরা আলোচনা করেছিলাম। শ্রমিক নেতাদের সাথেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আমরা উভয়পক্ষের জন্য কল্যাণকর একটি পন্থা খুঁজে বের করে মজুরি বাড়ানোর কথাবার্তা পাকা করছিলাম। এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ১৩৪ টাকা প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। শ্রমিকেরা আরো কিছু বাড়ানোর অনুরোধ করছিল। ১৪০ টাকার মধ্যে হয়তো একটি সুরাহা হতো। কিন্তু আলোচনা চলমান অবস্থায় হুট করে এমনভাবে সব অচল করে দেয়া হলো যাতে বাগানগুলো বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হলো।
মির্জা সালমান ইস্পাহানী বলেন, টানা কয়েকদিন পাতা না তোলায় গাছের কুঁড়িগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পাতাগুলো বড় হয়ে গেছে। এগুলো থেকে আর মানসম্পন্ন চা উৎপাদন হবে না। প্রতিটি বাগানই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন। তিনি চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এখন তিনি নিশ্চয় বাগান মালিকদের বেঁচে থাকার বা বাগানগুলো চালু রাখার বিষয়টিও দেখবেন। তিনি বলেন, আমরা মানসম্মত পাতা উৎপাদনের জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছি। যে পাতাগুলো বড় হয়ে গেছে সেগুলো থেকে বাছাই করে ভালো পাতা নিয়ে চা উৎপাদন করার চেষ্টা হবে। বাজারে যোগান কমে যাওয়ায় চা পাতার দামও বেড়ে যাবে। দাম বাড়ানোর ব্যাপারটি চা বাগান মালিকদের হাতে নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অকশনে দাম নির্ধারণ হয়। অকশনে যোগান কম হলে দাম বেড়ে যাবে। যার প্রভাব পড়বে খুচরা বাজারে। মানুষকে বেশি দামে পাতা কিনতে হবে।
তিনি বেশ দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমাদের চা শিল্প অনেক পুরানো একটি শিল্প। কিছু ঝড় ঝাপ্টা মোকাবেলা করলেও সকলের সহযোগিতায় এই শিল্প নিশ্চয় বেঁচে থাকবে। দেশের স্বার্থে এই শিল্পের টিকে থাকা জরুরি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রমিকদের আন্দোলন চা বাগানগুলোকে শেষ করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট
পরবর্তী নিবন্ধবাকলিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১৮