ভাবতেও অবাক লাগে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে বাংলাদেশ যখন উন্নয়ন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জন, উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা লাভ, আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশ্বের রোল মডেল ও প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্খিত অগ্রগতি, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধশালী এদেশে চা শ্রমিকরা যখন দৈনিক ১২০ টাকার মজুরিতে কাজ করে। বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের জীবন-ধারণ সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। অথচ একজন শ্রমিকের মজুরি হিসাবে দেয়া হয় মাত্র ১২০ টাকা, যা দিয়ে বর্তমান বাজারে একজন মানুষের খাবার ও আনুষাঙ্গিক খরচ মেটানো কষ্টকর নয় কি? সেখানে কী করে পরিবারের বাকি চার-পাঁচ জন সদস্য বা ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, চিকিৎসা, খাদ্য ও বিবিধ ব্যয় পূরণ করা কিভাবে সম্ভব? সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকেরা এ মজুরি অন্যায্য অযৌক্তিক মনে করে গত ১৩ আগস্ট থেকে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে অনড় থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় অনিদিঅষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। যদিও বর্তমান সময়ে সরকার ও মালিক পক্ষ ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব নাম মাত্র গুটি কয়েকজন মানলেও বাকি শ্রমিকেরা এই বৃদ্ধি ন্যূনতম বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত নয় বলে রুটি-রুজির সংগ্রামে রত আছেন।
সুতরাং দুর্মূল্যের বাজারে এটাকে আমলে নিয়ে তাদের মজুরি বাড়ানো অত্যন্ত সময়পযোগী কেননা বাংলাদেশ যখন উন্নয়নশীল দেশের মযার্দা লাভ এবং মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে সাত গুণ, সেখানে তাদের মজুরির সাথে মাথাপিছু আয় কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? কিন্তু বিগত দশকগুলোতে চা শিল্পের ক্রমবর্ধমান উন্নতি ও বিকাশ পরিলক্ষিত হলেও চা শ্রমিকের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি যা খুবই হতাশাজনক। সুতরাং মানবিক কারণে চা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি আর অবহেলা ও কালক্ষেপণ না করে সরকার ও মালিক পক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত শ্রমিকদের এই যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া উচিত।












