কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাদ্রাসা পরিচালনায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা কমিটির পদ-পদবী নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাওলানা জিয়াউর রহমান (৫০) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মাদ্রাসা শিক্ষিকা রহিমা বেগম (৪২)। তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই মাদ্রাসার শিক্ষক। এ ঘটনায় পুলিশ তিন নারীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হল ময়না আক্তার, তাসমিন আক্তার, সমিরা আক্তার, নুরুল আলম ও মোসলেম উদ্দিন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাটা সোমাইয়া (রা.) বালিকা দাখিল মাদ্রাসার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ মাদ্রাসার শিক্ষিকা স্ত্রী রহিমাকে আনতে গিয়ে খুন হন তাজিয়াকাটা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য ও সাবেক শিক্ষক মাওলানা জিয়াউর রহমান। তিনি তাজিয়াকাটা গ্রামের মৃত সাহেব মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, মাদ্রাসার এমপিওভুক্তি নিয়ে মাদ্রাসা কমিটি ও জমি দাতাদের সাথে শিক্ষকদের বিরোধকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মোহাম্মদ বকসুবর গোষ্ঠী ও লালারবর গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে এক মাস পূর্বে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাই মাওলানা জিয়াউর রহমান আমার ভাবীর মাদ্রাসায় গিয়ে ভাবীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের আনছার, মহিউদ্দিন, শেফায়েত উল্লাহ, এবাদুল্লাহ, নেছার, মোস্তাকসহ ৮-১০ জন সন্ত্রাসী মাদ্রাসায় প্রবেশ করে আমার ভাইকে টেনে মাঠে এনে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করে। ভাবী স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। তাকে আশক্সক্ষাজনক অবস্থায় প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে চমেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রণব চৌধুরী বলেন, ঘটনার বিষয়ে যতদূর জেনেছি, দারুল হেদায়া নূরানী মাদ্রাসা নামে অপর একটি মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির পদ-পদবী ও হিসাব-নিকাশ নিয়ে মাওলানা জিয়াউর রহমানের ভাতিজা নছর উল্লাহর সাথে স্থানীয় অপর গ্রুপের মহিউদ্দিন গং এর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মূলত এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার উপর হামলা হয়েছে। সহকারী পুলিশ সুপার আবু তাহের ফারুকী বলেন, ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।