বোয়ালখালীতে হারাধন চৌধুরী (৬৫) নামে সাবেক এক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলার উত্তর কড়লডেঙ্গা গ্রামের হরদাশ মাতব্বর বাড়ির পুকুর পাড় থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। হারাধন ওই বাড়ির মৃত চিন্তাহরণের পুত্র। এ ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে গতকাল বিকালে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন তার স্ত্রী সুপ্রিয়া।
পুলিশ জানায়, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন হারাধনের স্ত্রী। হারাধন কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, ইউপি সদস্য থাকাকালীন সময় হতে এলাকায় মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে খুবই সোচ্চার ছিলেন হারাধন। এছাড়া জায়গা জমি নিয়েও কয়েকজন প্রতিবেশীর সাথে তার বিবাদ ছিলো। স্থানীয়রা বলেন, মনসা পূজা উপলক্ষে ঘটনার দিন গভীর রাত পর্যন্ত গল্পগুজবে ব্যস্ত ছিলাম আমরা। এ সময় রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ির বাইরে বেশ কয়েকটি সিএনজি চালিত অটোরিকশার শব্দ শোনা যায়। ঘর থেকে হারাধনের স্ত্রী বের হয়ে অটোরিকশায় তাদের প্রতিপক্ষ এলাকার পরিচিত এক লোককে দেখেন। এ সময় তিনি পুলিশ নিয়ে এসেছেন সন্দেহে স্বামীকে সরে যেতে বলেনা। তখন হারাধন ঘরে প্রবেশ না করে বাইরে অবস্থান করছিলেন। পরদিন ভোরে পূজার ফুল তুলতে গিয়ে বাড়ির পুকুর পাড়ে তার লাশটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।
নিহতের স্ত্রী সুপ্রিয়া চৌধুরী বলেন, রাতে বাড়ির আশেপাশে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিলো। তা দেখে আমার স্বামী ভয় পেয়ে যায়। সেজন্য সে ঘরে না ফিরে বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলেন। পরদিন ভোরে পুকুর পাড়ে তার লাশ পাওয়া গেছে। সুপ্রিয়া চৌধুরী জানান, তার ধারনা রাতে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে খুনিরা হত্যা করে ফেলে যায়। সেজন্য তিনি প্রতিবেশী সনাঙ্ক দত্তের পুত্র বিপ্লব দত্তকে (৪২) প্রধান করে মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক জানান, হারাধনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পাশ থেকেই হারাধনের ব্যবহৃত মোবাইল ও একটি কম্বল উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার শরীরের আঘাতের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। তবে গায়ে কাদা পানি লেগে ছিল। ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশী তৎপরতা অব্যহত আছে।
উল্লেখ্য, নিহত হারাধনের দুই সংসারে ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। তার প্রথম স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে শহরে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রী সুপ্রিয়া ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন হারাধন চৌধুরী। তিনি কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।