আশুরার ইতিহাস গৌরবের, গ্লানির নয়

তাওহীদুল ইসলাম নূরী | মঙ্গলবার , ৯ আগস্ট, ২০২২ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম মুসলমানদের নিকট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্ববহ। আল্লাহর কাছে যে চারটি মাস প্রিয় তারমধ্যে মহররম একটি। অধিকাংশ মুসলমানই আশুরা তথা মহররমের ১০ তারিখকে শুধু শোকের দিন এবং মহররম মাসকে বেদনার মাসই বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু, আশুরার এই দিনটির যত ইতিহাস জানা যায় সবটার মাধ্যমেই ইসলামের বিজয়, গৌরবই রচিত হতে দেখা যায়।
নবীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জান্নাতে নিষিদ্ধ ফল খাওয়ায় পর আল্লাহ হযরত আদম (আ.) এর তওবা চল্লিশ বছর পর এই দিনে কবুল করেন। দশ আশুরা তথা মহররমের এই ঐতিহাসিক দিনটিতেই আল্লাহ তাঁর নবী হযরত মুসা (আ.) এর হাতে ফেরাউন ও তার বাহিনিকে নীল নদে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। হযরত আইয়ুব (আ.) কে দীর্ঘ আঠারো বছর পর এই দিনে আল্লাহ রোগমুক্ত করেন। হযরত ইব্রাহিম (আ.) কে এই দিনেই নমরুদের দেয়া অগ্নিকুণ্ড থেকে আল্লাহ রক্ষা করেছিলেন। আল্লাহ হযরত ইউনুস (আ.) এর মাছের পেট থেকে করা তওবা চল্লিশ দিন পর এই দিনে কবুল করেন। হযরত দাঊদ (আ.) এর তওবাও এই দিনেই কবুল হয়েছিল। হযরত ঈসা (আ.) এর জন্মের দিন হিসেবেও এই আশুরাকে ধরা হয়।
যে ইতিহাসকে কেন্দ্র করে দশ মহররম তথা আশুরার দিনটিকে বেদনা এবং শোকের হিসেবে ধরা হয়, সেটি হচ্ছে ৬১ হিজরি সনের এই দিনে কারবালার প্রান্তরে আদর্শের বিশ্বমানব বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর নাতি হযরত ইমাম হোসাইন (র.) এর শাহাদাতের হৃদয়বিদারক ঘটনাকে ঘিরে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা মায়িদায় পর পর তিনটি আয়াতের মাধ্যমে বলেছেন মানুষ যদি কাফের, ফাসেক এবং জালিমমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ চায় তাহলে আল্লাহ বিশ্বনবীর মাধ্যমে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা দিয়েছেন সেটার অনুসরণ করতে হবে। আর, ইমাম হোসাইন (র.) কারবালার প্রান্তরে নিজের প্রাণকে বিলিয়ে দিয়ে ইয়াজিদের সেই কাফের, ফাসেক ও জালেমি খেলাফত ব্যবস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বনবী প্রদর্শিত খেলাফত ব্যবস্থা কায়েমের পথকেই সুগম করে গেছেন। আপাত দৃষ্টিতে এখানে ইমাম হোসাইনের পরাজয় দেখা গেলেও, গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে মুসলমানদের বিজয়ই এখানে লক্ষ্যণীয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশুদের মস্তিষ্ক বিকাশ ও আমাদের যা করণীয়
পরবর্তী নিবন্ধবৃক্ষমেলা আর বিদ্যুতের খেলা