চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রসংসদের নতুন কমিটির কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। গত ২৬ জুলাই চট্টগ্রাম সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেনের করা রিটের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত ওইদিনই তিনমাসের জন্য সদ্য ঘোষিত ছাত্রসংসদের সমস্ত কর্মকাণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এই আদেশ পৌঁছে। আদেশে অধ্যক্ষকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত। উচ্চ আদালতে রিট আবেদনকারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, দেশে বা কলেজের কোথাও জরুরি অবস্থার কোনো পরিস্থিতি না থাকলেও অধ্যক্ষ নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে অ্যাডহক কমিটি নিয়োগ করেন।
আবার দুইদিনের মাথায় ওই কমিটিকেই ছাত্রসংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে স্বাক্ষর করেন যেটি ছাত্রসংসদের সংবিধান পরিপন্থী। শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে আমি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছি। অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের মতামতের তোয়াক্কা না করে নিজ মর্জি মাফিক ছাত্রসংসদের কমিটি গঠন করেন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধিকার বঞ্চিত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চান। আদালতে সাজ্জাদ হোসাইনের আইনজীবী হিসেবে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব এবং সজল মল্লিক।
গত ২১ জুন কলেজের অধ্যক্ষ ছাত্রসংসদের সংবিধানের দুইটি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে এডহক কমিটি গঠন করেন। কিন্তু এর মাত্র দুইদিন পরেই ওই এডহক কমিটিকে ছাত্রসংসদের পূর্ণ কার্যনির্বাহী কমিটি হিসেবে স্বাক্ষর করেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমেই ছাত্রসংসদ গঠন করতে হয় যেখানে ভোটার হবেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কলেজ সূত্র জানায়, ছাত্রসংসদের নির্বাচনের কতগুলো প্রক্রিয়া রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে, নির্বাচন কমিশন গঠন করা, তফসিল ঘোষণা, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্যানেল আহ্বান করা।
অধ্যক্ষ এসব নিয়মের কোনোটাই অনুসরণ না করে সরাসরি ছাত্রসংসদ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১ ও ১২ (ঘ) অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে গত ২১ জুন অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। মাত্র দুইদিন পর ২৩ জুন ওই অ্যাডহক কমিটিকেই ছাত্রসংসদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হিসেবে তাতে স্বাক্ষর করেন। একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, অধ্যক্ষ দুইটি অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রথমে অ্যাডহক এবং পরে ছাত্রসংসদ গঠন করেছেন। ১১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে এডহক কমিটি গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই, এই অনুচ্ছেদে ছাত্রসংসদের কার্যনির্বাহী পরিষদের কথা উল্লেখ আছে। আর ১২ (ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থার উদ্ভব হলে অধ্যক্ষ পূর্বের ছাত্রসংসদ বাতিল করে অ্যাডহক কমিটি নিয়োগ করতে পারবেন।