চান্দগাঁও থানাধীন হামিদ চর প্রকল্প বা মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশায় সংযোজন হচ্ছে। কয়েকটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা মতামত প্রদান করায় নকশায় নতুন করে এ সংযোজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস হামিদ চর প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশাটি দেখেছেন। এর মধ্যে গত রোববার সার্কিট হাউজে জঙ্গল সলিমপুর প্রকল্প নিয়ে হওয়া মতবিনিময় সভা শেষে মুখ্য সচিব নকশাটি দেখেন এবং মতামত দেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ সংযোজন কাজ শেষ হবে। এরপর আগামী ১৫ আগস্টের পর সংযোজনকৃত চূড়ান্ত নকশা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন মিললে এবং প্রয়োজনীয় কিছু কার্যক্রম শেষে শুরু হয়ে যাবে নির্মাণ কার্যক্রম। তিনি বলেন, এ প্রকল্প নির্মিত হলে চট্টগ্রামের মানুষ কী কী সুবিধা পাবে সেসব নিয়ে আমরা একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকার একজন প্রফেশনাল মানুষ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজটি করবেন।
গত ১৮ জুলাই হামিদ চর প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেছিলেন, আনোয়ারার যে এলাকায় কর্ণফুলী টানেল গিয়ে শেষ হয়েছে সেখান থেকে চান্দগাঁওয়ের হামিদ চর প্রকল্পে বা মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম প্রকল্পে যাবে ক্যাবল কার ও ওয়াটার বাস। আকাশ ও নৌ পথে প্রকল্প এলাকায় যাতায়াত করবে এ যানবাহনগুলো। এ জন্য সেখানে নির্মাণ করা হবে একটি কমন জেটি। নকশায় কর্পোরেট অফিসের জন্য কয়েকটি ভবনও যুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে নকশায় এ সব সংযোজন করা হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে পাল্টে যাবে চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রমের চিত্র। সেবা প্রার্থীরা খুব সহজে এক জায়গা থেকে নানা সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চলতি বছরই শুরু হতে যাচ্ছে বিশাল এই প্রকল্পের কাজ। এখানে গড়ে তোলা হবে সর্বমোট ৪৪টি সরকারি অফিস। বন্দর মৌজার হামিদ চরের ৭৫ একর জায়গায় নির্মাণ হবে সরকারের এই প্রকল্প।
প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে মিনি সেক্রেটারিয়েট ফর চট্টগ্রাম। মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ার আদলে এটি নির্মাণ করা হবে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
মূলত নগরে চাপ কমাতে ও সাধারণ মানুষকে এক জায়গায় সব ধরনের সেবা দিতে প্রকল্প গড়ে তোলার উদ্যোগটি নেয় জেলা প্রশাসন। প্রকল্পের নকশায় আরো থাকছে জুডিশিয়ারি বা আদালতের জন্য নির্ধারিত স্পেস, প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটি স্যাটেলাইট অফিস, মেলার জন্য স্পেস, সার্কিট হাউস ও রিসোর্ট, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, স্পোর্টস কমপ্লেঙ, কনভেনশন সেন্টার, ক্লাব হাউস, শপিং মল, মাল্টি স্টোরেড কার পার্কিং, স্কুল-কলেজ, পরিবহন পুল, পেট্রোল পাম্প, স্মৃতিসৌধ, নভোথিয়েটার, মসজিদ, মুক্ত মঞ্চ ও কালচারাল কমপ্লেঙ, কনডোমিনিয়াম, সরকারি কর্মচারীদের আবাসিক এলাকা, ওয়াচ টাওয়ার, হাইটেক পার্ক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হাসপাতাল, ইউটিলিটি ভবন, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ক্যাবল কার, ওয়াটার বাস – এমনকি প্রকল্প এলাকার জন্য একটি কমন জেটি। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতে প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল। তবে নানা কারণে তা হয়নি।