কারো উপরই যখন আর কোনো প্রত্যাশা থাকে না মানুষ তখন নির্বিকার হয়ে ওঠে এবং কিছুটা নির্ভীকও। এতে নিভর্রশীলতা থেকে মুক্তি মেলে যেমন তেমনি কারো সমালোচনাকে গ্রাহ্য না করে নিজের ভালো-মন্দ বিচারে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে নিজেই। কারো উপর অতিরিক্ত প্রত্যাশা করা ছেড়ে দিয়ে নিজের উপর আস্থাশীল ও আশাবাদী হোন। নিজেকে ভালো রাখার দায়িত্ব নিজে নিতে চেষ্টা করুন। অন্য কেউ আপনাকে ভালো রাখবে, সুখী করবে, দুঃখ দেবে না এই প্রত্যাশা কখনো করবেন না। এতে দুঃখ ও হতাশা বাড়ে বৈ কমে না।
নিজেকে ভালোবাসুন ভালো থাকতে চাইলে। পরিপাটি ও গুছিয়ে রাখুন জীবনের প্রতিটি ক্ষণ। কে কী বললো বা ভাবলো তা এড়িয়ে চলুন। আপনার নিন্দুক এবং সমালোচকরা আপনাকে কখনো আনন্দ দিয়ে সুখী করতে চেষ্টা করবে না। তাই তাদের কোনো নেগেটিভ কথা গ্রাহ্য করবেন না। নিজেই ভাবুন আপনি যা করছেন তা ভালো বা মন্দ কতটুকু। যারা আপনাকে অবহেলা করবে তাদের ছায়া পড়তে দেবেন না আপনার জীবনে। মন থেকে মুছে ফেলুন তাদের নাম। তাতে যদি একা থাকতে হয় সে অনেক ভালো। অন্তত অবহেলিত হচ্ছেন ভেবে কষ্ট পাবেন না। কোনো সম্পর্ক একতরফা তৈরি যেমন হয় না তেমনি একতরফা টিকিয়ে রাখাও অসম্ভব। কাজেই যেখানেই আপনি অবহেলিত সেখান থেকে সরে আসুন দ্বিতীয় বার চিন্তা না করে। একটা কথা চিরন্তন সত্য কেউ কাউকে ভালোবাসলে সে একই সাথে অবহেলা করতে পারে না কখনও। ভালোবাসার সাথে কখনো অবহেলা থাকে না। কেয়ার নেওয়া এবং গুরুত্ব দেওয়া ভালোবাসার সাথে জড়িয়ে থাকে যেমন থাকে শিশুর সাথে মা।
নিজেকে কখনো একা ভাববেন না। প্রকৃতির সাথে একাত্ম হোন। সঙ্গী না থাকলে একাই বেরিয়ে পড়ুন প্রকৃতির সান্নিধ্যে। ঈশ্বরের সৃষ্টির সাথে একাকার হয়ে নিজেকে সঁপে দিন। উপভোগ করুন সৃষ্টির রস ও রহস্য। সঙ্গী করুন বই ও সঙ্গীত এবং কোনো পোষা প্রাণী। শিশুদের সাথে সময় কাটাতে চেষ্টা করুন। এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার নানাবিধ সুস্থ উপায় আছে। জীবনকে শুধু সহজ করে রাখতে হয়, চাহিদা সীমিত রাখতে হয়। সুখের সংজ্ঞা পদ, পদবী, যশ, খ্যাতি বিত্ত ও ভোগে নয় তা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে পারলেই সুখের আবাস গড়া যায় হৃদয়ে। জীবন খুব ছোট। চলুন ছোট ছোট জিনিষের মধ্যে আনন্দ কুড়িয়ে প্রাণ ভরে বেঁচে থাকি।