আইনের আওতায় দণ্ড কার্যকর হয়েছে এবং সাজাপ্রাপ্তদের আত্মরক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন মিয়ানমার জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ মিন তুন। চার গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকর্মীর মৃত্যুদণ্ডকে আইনসম্মত অ্যাখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা বলেছে, জনগণের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মঙ্গলবার জান্তার মুখপাত্র জ মিন তুন এসব বলেছেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এসব মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। আইনের আওতায় দণ্ড কার্যকর হয়েছে এবং সাজাপ্রাপ্তদের আত্মরক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তুন। খবর বিডিনিউজের। মিয়ানমারে কয়েক দশকের মধ্যে এবারই প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হল। এ পদক্ষেপের যে ব্যাপক সমালোচনা হবে মিয়ানমারের সামরিক সরকার তা জানত বলেও মন্তব্য করেছেন মুখপাত্র জ মিন তুন। চার আন্দোলনকর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এরইমধ্যে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জান্তার বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতার অভিযোগ করেছে। মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনী পরিচালিত আদালতের গোপন বিচারে যে শতাধিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে এ চারজন ছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় জান্তা এখন বাকিদের মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাইলটের মনের কথা পড়বে টেম্পেস্ট
আকাশে একা উড়বে না টেম্পেস্ট সঙ্গ দেবে একাধিক চালকবিহীন সামরিক ড্রোন। পাইলট দিশা হারিয়ে ফেললে বা মাধ্যাকর্ষণের টানে চেতনা হারিয়ে ফেললে টেম্পেস্টের নিয়ন্ত্রণ নেবে এআই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পাইলটরা বলতেন, তাদের স্পিটফায়ারগুলো এতো দ্রুত সাড়া দেয়, যেন তাদের দেহেরই একটা অংশ প্লেনগুলো। চলতি দশকের শেষে পাইলট আর তার ফাইটার প্লেনের সম্পর্ক হয়তো হবে এর চেয়েও বেশি নিবিড়। টেম্পেস্ট জেট নামের নতুন একটি ফাইটার জেটের নির্মাণকাজ চলছে ইউরোপে। নির্মাতারা বলছেন, পাইলটের মনের কথা পড়তে পারবে টেম্পেস্ট। বিবিসি জানিয়েছে, টেম্পেস্ট নির্মাণে একযোগে কাজ করছে যুক্তরাজ্যের বিএই সিস্টেমস, রোলস-রয়েস, ইউরোপিয়ান মিসাইল গ্রুপ, এমডিবিএ এবং ইতালিভিত্তিক সমরাস্ত্র নির্মাতা কোম্পানি লিওনার্দো। খবর বিডিনিউজের। আগের প্রজন্মের যুদ্ধবিমানগুলোর সঙ্গে টেম্পেস্ট জেটের সবচেয়ে বড় পার্থক্য হবে সম্ভবত এর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম বা এআই। পাইলট চাপের মুখে দিশা হারিয়ে ফেললে অথবা মাধ্যাকর্ষণের টানে চেতনা হারিয়ে ফেললে পাইলটকে সহযোগিতা করবে এআই। পাইলটের মস্তিষ্কের তরঙ্গ আর শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখবে হেলমেটের সেন্সর। বারবার একটি টেম্পেস্ট জেট ওড়ালে পাইলটের বিপুল পরিমাণ বায়োমেট্রিক ও সাইকোমেট্রিক ডেটার বড় ডেটাবেইজ তৈরি হবে সেন্সর থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। আর ওই ডেটাবেইজের ভিত্তিতেই এআই সিদ্ধান্ত নেবে কখন পাইলটের সাহায্য দরকার, প্রয়োজনে জেটের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারবে এআইটি। তবে, টেম্পেস্ট জেটের নকশার কাজ এখনও শেষ হয়নি।
২০১৮ সালে এর একটি মডেল দেখিয়েছিল জেটের নির্মাতারা। সে সময়ে ফাইটার জেটটিকে অনেকে পেট মোটা পেলিক্যান পাখির সঙ্গে তুলনা করলেও, নকশা আর নির্মাণকাজের অগ্রগতির সঙ্গে বড় পরিবর্তন এসেছে এ জঙ্গি বিমানে। বিবিসি জানিয়েছে, গেল চার বছরে এর ওজন কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে নির্মাতারা, বাহ্যিক নকশায় এসেছে একহারা ভাব। সমপ্রতি যুক্তরাজ্যের ফার্নবোরো এয়ার শোতে বিএই সিস্টেম জানায়, টেম্পেস্ট জেটের কিছু প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখতে ২০২৭ সালে যুক্তরাজ্যের ওয়ার্টনের কারখানা থেকে ল্যাঙ্কাশায়ারে উড়িয়ে নেওয়া হবে এর একটি প্রোটোটাইপ। ওই প্রোটোটাইপটির মাধ্যমে অন্তত ৬০টি নতুন ডিজিটাল প্রযুক্তি পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি পুরোপুরি সফটওয়্যার নির্ভর। আর যখন আকাশে উড়বে, একা থাকবে না টেম্পেস্ট। একাধিক চালকবিহীন সামরিক ড্রোন টেম্পেস্টকে সঙ্গ দেবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। কিন্তু টেম্পেস্ট আর এর চালকবিহীন সঙ্গীদের কার্যকর ব্যবহারের জন্য নির্মাতাদের একদম নতুন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তি নির্মাণ করতে হচ্ছে। প্রযুক্তি যে গতির পরিবর্তিত হচ্ছে, আমাদেরও তার সঙ্গে তাল মেলাতে হচ্ছে, অকপট স্বীকারোক্তি দিয়েছেন টেম্পেস্ট প্রকল্পের পরিচালক জন স্টোকার। তিনি বলেন, আগে প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয় থেকেই প্রযুক্তির অগ্রগতি হত, আর বাণিজ্যিক প্রযুক্তি পরে তার সমপর্যায়ে আসত। কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রেই বাণিজ্যিক প্রযুক্তি বেশি এগিয়ে আছে।