করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির দায়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, তার স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ আট আসামির সবাইকে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন গতকাল মঙ্গলবার আসামিদের উপস্থিতিতে আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এ মামলায় একই অভিপ্রায় নিয়ে সকল আসামি ঘটনা ঘটিয়েছে। তাই সকলেই একইভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। খবর বিডিনিউজের।
মহামারীর প্রথম বছর জেকেজির জালিয়াতির ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে এলে সারা দেশে আলোড়ন তৈরি হয়। এর সঙ্গে সরকারি চাকরিতে থাকা চিকিৎসক সাবরিনার যোগসাজশ বিষয়টিকে নতুন মাত্রা দেয়। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চাকরিচ্যুত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা বলেন, আমি চেয়ারম্যান ছিলাম না, এই সাজা কীভাবে হল? আপিলের কথা তো পরে। কী হবে বুঝতে পারছিলাম, কিন্তু এতটা হবে বুঝতে পারিনি।
সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল ছাড়া মামলার বাকি ছয় আসামি হলেন- আরিফুলের বোন জেবুন্নেছা রিমা, সাবেক কর্মচারী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী তানজিলা পাটোয়ারী, জেকেজির কো-অর্ডিনেটর আবু সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির কর্মচারী বিপুল দাস ও শফিকুল ইসলাম রোমিও।
বিচারক তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী রাষ্ট্র এবং জনগণ সকলের জন্যই ছিল একটি দুর্যোগ। সেই দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকার কিছু হাসপাতালকে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার দায়িত্ব প্রদান করে। যেসব শর্তে করোনা পরীক্ষার দায়িত্ব পেয়েছে, জেকেজি হেলথ কেয়ার সেসব শর্ত লঙ্ঘন করে লাভবান হতে প্রতারণা, জাল রিপোর্ট তৈরি এবং জাল প্রত্যয়নপত্রকে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৬ ও ৪৭১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এই রায়কে স্বাগত জানালেও আরও বেশি সাজা না হওয়ায় আপিল করার ভাবনার কথা বললেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, যে সাজা হয়েছে, তাতে কয়েকটি অভিযোগে আসামিরা খালাস পেয়েছেন। যেসব ধারায় দণ্ড হয়েছে, তাতে আরও বেশি সাজা হতে পারত। খালাস বা অপর্যাপ্ত দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, তা পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মনে করছেন, এই রায়ে তাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আসামিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, রায়ে আদালত কোনো পর্যবেক্ষণ দেননি, তবে সাক্ষ্য প্রমাণে এসেছে- জেকেজি বৈধ প্রতিষ্ঠান।











