চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরীর ওপর ন্যক্কারজনক হামলা এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের চিকিৎসক, শিক্ষক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় চমেক হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা।
চমেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনোয়ার উল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় কুমার দত্তের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুল হক খান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ শরীফ, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুল ইসলাম, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার দাশ, চমেক হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. মো. হুমায়ুন কবির, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মো. সাইফ উদ্দিন, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন চমেক হাসপাতাল শাখার সহ-সভাপতি নাজনীন আক্তার, তৃতীয় শ্রেণির মেডিকেল সরকারি কর্মচারী সমিতির সভাপতি এস এম হেলাল উদ্দিন পান্না, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির শাখার সভাপতি আব্দুল মানিক প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ৩ জুলাই চমেক হাসপাতালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এক উপ-সচিবের আত্মীয় পরিচয়ে জনৈক রেজাউল ইসলাম চিকিৎসক ও স্টাফদের জন্য সংরক্ষিত লিফটে জোরপূর্বক প্রবেশ করতে যায়। এ নিয়ে সৃষ্ট বচসায় কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ উস্কানিমূলকভাবে চমেকের অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমান চৌধুরীর উপর হামলা করে মারাত্মকভাবে আহত করে। এ ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালকের নির্দেশে অভিযুক্ত রেজাউলকে তাৎক্ষণিকভাবে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয় এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনে মুক্ত হয়ে সেই কথিত আত্মীয়ের (উপ-সচিব) প্রভাব খাটিয়ে তার স্ত্রীকে দিয়ে হামলা ও নারী নির্যাতনের একটি মিথ্যা মামলা আদালতে দায়ের করে।
ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরীর উপর ন্যাক্কারজনক হামলা এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, চিকিৎসকদের জন্যে কাজের নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে চিকিৎসক সমাজ সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু হাসপাতালে এরকম ঘৃণ্য কার্যকলাপ চলতে থাকলে এর ফলে রোগীদের সেবা প্রদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। কতিপয় ব্যক্তি কর্তৃক অন্যায়ভাবে প্রভাব খাটানো বা প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে অন্যায় কাজকে উৎসাহিত করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, চিকিৎসক সমাজ নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং অবিলম্বে ডা. মো. মিজানুর রহমান চৌধুরীর উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে। অন্যথায় আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেয়া হয় প্রতিবাদ সমাবেশে।