১৯ বছর বয়সে মনে অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে প্রথমবার রক্ত দেন তিনি। সেই থেকে শুরু, এরপর গত ৩২ বছরে প্রসূতি মা, থ্যালাসেমিয়া রোগী, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতসহ বিভিন্ন মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দিয়েছেন ১০০ বার। বলছি নগরীর আন্দরকিল্লার প্রিন্টিং ব্যবসায়ী মো. নাজমুল ইসলামের কথা।
রক্তদানের প্রথম স্মৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক আজাদীকে বলেন, তখন আমি মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হয়েছি। পরিচিত এক লোকের মাধ্যমে শহীদ মিনারে একটি স্বেচ্ছায় রক্তাদান কর্মসূচিতে রক্ত দিই। প্রথমবার রক্ত দেয়ার পরে রক্ত দেয়ার প্রতি আগে যে ভীতি ছিল সেটি কেটে যায়। এরপর ভিতর থেকে রক্ত দেয়ার তাগিদ অনুভব করি।
মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, কখনো রক্ত দিয়ে শারীরিক কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হইনি। উল্টো আমার রক্তে একটি প্রাণ বেঁচে উঠবে এই চিন্তা করেই মনের মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।
তিনি বলেন, রক্তদান যেহেতু একটি মহৎ কাজ, তাই এই কাজে আমি সবসময় সবার উৎসাহ পেয়েছি। সেই উৎসাহ থেকে সন্ধানীতে রক্ত দিয়েছিলাম ৯৪ বার, লায়ন্সে ৪ বার, রোটারিতে একবার এবং আরেকবার দিয়েছিলাম ইউএসটিসিতে। এর মধ্যে ১৯৯৬ সালে ইউএসটিসিতে এক বৃদ্ধ রোগীকে রক্ত দিয়েছিলাম। সেই রক্তদান ছিল আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা। সেইদিন মধ্যরাতে প্রচুর বৃষ্টি পড়ছিল, সড়কে ছিল না কোনো গাড়ি। তবু অনেক কষ্ট করে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে রক্ত দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ১০০ বার রক্ত দেয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ সন্ধানী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ শাখা থেকে আমাকে আজ (গতকাল) সম্মাননা দেয়া হয়েছে। কখনো সম্মাননা পাবো ভেবে কাজ করিনি। তবে সম্মাননা পাওয়া সব সময় আনন্দের। আমি গত ১২ দিন আগে ১০০তম বার রক্ত দিয়েছি। যতদিন শরীর সুস্থ থাকে, আমি রক্ত দিয়ে যাব।
ব্যক্তিগত জীবনে এক কন্যা সন্তানের জনক মো. নাজমুল ইসলাম তরুণদের উদ্দেশে বলেন, রক্ত দেয়া শরীরের জন্য খুবই ভালো। আপনার এক ব্যাগ রক্তে বাঁচতে পারে একজন রোগীর প্রাণ।












