বিজেপির সেই যুবনেতা গ্রেপ্তার

| বৃহস্পতিবার , ৯ জুন, ২০২২ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য পোস্ট করায় ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির যুব সংগঠনের এক নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। নবীকে নিয়ে কয়েকজন বিজেপি নেতার মন্তব্যের জেরে নয়া দিল্লি কূটনৈতিক সংকটে পড়ার পর এ যুবনেতার গ্রেপ্তারের খবর এল। খবর বিডিনিউজের।

গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর হার্ষিত শ্রীবাস্তবকে উত্তর প্রদেশের একটি কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মুসলমানদের বিক্ষোভকে ঘিরে সামপ্রদায়িক অস্থিরতার পর উত্তর প্রদেশের কানপুর শহর থেকে শ্রীবাস্তবকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন যুবনেতা।

কানপুর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেছেন, মুসলিমবিরোধী উত্তেজক বক্তব্য দেওয়ায় আমরা স্থানীয় এক রাজনীতিককে গ্রেপ্তার করেছি। এ বিষয়ে শ্রীবাস্তবের আইনজীবীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। কানপুরে অস্থিরতার পর অন্তত ৫০ জনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন প্রশান্ত।

এক টেলিভিশন বিতর্কে নবীকে নিয়ে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্যের পর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা, অস্থিরতা দেখা গেছে। বিজেপি পরে জানায়, তারা নূপুরের সদস্যপদ স্থগিত করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম নিয়ে মন্তব্যের কারণে আরেক মুখপাত্র নভিন কুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করেছে।

নবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তানসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বিভিন্ন দেশ ভারত সরকারকে ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি জানালে এবং দেশটির কূটনীতিকদের তলব করলে ভারতের মুসলমানদের ক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়।

৫৭ দেশের প্রভাবশালী জোট ইসলামিক সহায়তা সংস্থা (ওআইসি) এক বিবৃতিতে বলে, ভারতে ইসলামের প্রতি ক্রমবর্ধমান তীব্র ঘৃণার পরিবেশ এবং মুসলমানদের পদ্ধতিগতভাবে হয়রানির পরিপ্রেক্ষিতেই এই অপমানের ঘটনা ঘটেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার বলে, নবীকে নিয়ে অবমাননাকর ওই টুইট ও মন্তব্যগুলো কোনেভাবেই ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নয়।

তারপরও পরিস্থিতি দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, এমনটা মনে হচ্ছে না। এই বিতর্ক মোদীর জন্যও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সামপ্রতিক বছরগুলোতে যিনি জ্বালানিসমৃদ্ধ মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করেছিলেন। এর মধ্যেই হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির একাধিক নেতাকে ধর্ম নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলার ক্ষেত্রে ‘ব্যাপক সতর্ক’ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে একশ গজের মধ্যে চার অবৈধ স’মিল
পরবর্তী নিবন্ধসাড়ে ৪ বছর পর বাংলাদেশিদের ভিসা দিচ্ছে বাহরাইন