যুক্তরাজ্যে নিয়োজিত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন বিবিসি–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তার দেশ ইউক্রেন যুদ্ধে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। তাছাড়া, রাশিয়ার সামরিক আইনানুযায়ী, ইউক্রেনের মতো সংঘাতের ক্ষেত্রে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। এসব অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম খুবই কড়া উল্লেখ করে কেলিন বলেন, কেবল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই তা ব্যবহার করা হয়। খবর বিডিনিউজের।
বিবিসি ওয়ানের সানডে মর্নিং প্রোগ্রামে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এই অস্ত্র ব্যবহারের কিছু নেই। এ বছর ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পরপরই পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তখন একে হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছিল। এর জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও নেটো জোটকে দায়ী করেছিলেন পুতিন।
তবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছিলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর জন্য এটি করা হয়েছে। নিজেদের হাতে যে এ ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে, তাও বিশ্বকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে রাশিয়া। সুকৌশলী পারমাণবিক অস্ত্রের তুলনায় যুদ্ধ কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র স্বল্প দূরত্বে ব্যবহার করা হয়। স্ট্র্যাটেজিক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয় দীর্ঘ দূরত্বে।
যুদ্ধ–কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে পুরোদস্তুর পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র, ছোট বোমাসহ বিভিন্ন অস্ত্র এ ধরনের পারমাণবিক অস্ত্রের মধ্যে পড়ে। রাশিয়ার কাছে প্রায় ২ হাজার ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে ধারণা করা হয়। বিবিসি সাক্ষাৎকারে আন্দ্রেই কেলিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, রাশিয়া কেন এভাবে যুদ্ধ করছে, যুদ্ধাপরাধ করছে? জবাবে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন,
প্রাথমিক বিবৃতিতে বুচা শহরের মেয়র নিশ্চিত করেছেন, রুশ সেনারা সরে গেছে। সবকিছু পরিষ্কার ও শান্ত। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কিছুই ঘটছে না, কেউ সড়কে নেই।
বিবিসির উপস্থাপক এরপর প্রশ্ন করেন, তাহলে কি সব অভিযোগ বানোয়াট ছিল? সব মিথ্যা? সব আলামত সাজানো ছিল? রুশ রাষ্ট্রদূত কেলিন তখন বলেন, ইউক্রেনের বুচা শহরে যুদ্ধাপরাধের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা আমাদের দৃষ্টিতে বানোয়াট। আলোচনা ব্যাহত করতে এটা করা হয়েছে। এর আগেও রাশিয়া একই ধরনের কথা বলেছিল। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, রুশ বাহিনী বুচা শহর থেকে সরে যাওয়ার পর মৃতদেহ উদ্ধারের যে ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে, তা সাজানো।